করোনা সংক্রমণে বিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতিকে টেনে তুলতে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের উদ্দেশ্য, আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলা। এই পরিস্থিতিতে এক চরম আশঙ্কার কথা শোনাল সেন্টার ফর মনিটারিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (CMIE)। তাদের সাম্পতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহের মধ্যে দেশের এক তৃতীয়াংশের বেশি পরিবার কপর্দক শূন্য হতে চলেছে এবং সহায়তা ছাড়া চরম দুর্দশার মুখোমুখি হতে চলেছে তারা।
লকডাউনের প্রভাবে ভারতীয় পরিবারগুলির আয়ে কী প্রভাব পড়েছে, মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে সিএমআইই। এতে দেখা যাচ্ছে, ৮৪ শতাংশ পরিবারের মাসিক আয় লক্ষণীয়ভাবে কমে গিয়েছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, দেশের এক চতুর্থাংশ কর্মক্ষম মানুষ এই লকডাউনের মধ্যে বেকার হয়ে পড়েছে বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট।
সংশ্লিষ্ট সমীক্ষার অন্যতম লেখক তথা CMIE এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক কৃষ্ণণ জানান, ভারতের ৩৪ শতাংশ পরিবারের আর এক সপ্তাহের বেশি সময় অতিরিক্ত আর্থিক সাহায্য ছাড়া টিকে থাকা মুশকিল। দেশের নিম্ন আয়কারী পরিবারগুলিকে দ্রুত আর্থিক সাহায্য করার ব্যাপারে জোর দেন সিএমআইই-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ।
আর্থিক দুরবস্থা, অপুষ্টি থেকে দেশের এই নিম্ন আয়কারী পরিবারগুলিকে বাঁচাতে নগদ অর্থ প্রদানের উপর জোর দিয়ে পরামর্শ সিএমআইই। অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি সহ একাধিক অর্থনীতিবিদ আগেই এই মত দিয়েছেন।
দেশে কীভাবে এবং কত দ্রুত বেকারি বাড়ছে তার একটি পরিসংখ্যান দিয়েছে সিএমআইই। তারা জানাচ্ছে, মার্চের ২১ তারিখে যেখানে দেশের বেকারির হার ছিল ৭.৪ শতাংশ তা ৫ মে তে এসে দাঁড়িয়েছে ২৫.৫ শতাংশে, যার প্রভাব পড়ছে দেশের পরিবারগুলির আয়ের উপর।
রাজ্যভেদে আবার এই প্রভাবের তারতম্য রয়েছে। দিল্লি, পঞ্জাব এবং কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলির পরিবারের উপর তেমন প্রভাব না পড়লেও, বিহার, হরিয়ানা এবং ঝাড়খণ্ডের মানুষের জীবনধারা ও আয়ে তীব্র প্রভাব পড়েছে, জানাচ্ছে এই রিপোর্ট।
বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউনের প্রভাব, লকডাউনের আগে ও পরে জনপ্রতি আয় ইত্যাদি এই তারতম্যের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে সিএমআইই-এর সাম্প্রতিক সমীক্ষায়।
Comments are closed.