গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠকেও জট কাটল না রাজস্থান জট, দীর্ঘ টালবাহানা, নাটকের পর মধ্য প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ

কার্যত বিগত দুদিন ধরে টালবাহানা এবং দফায় দফায় নাটকের পর অবশেষে মধ্য প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করতে পারল কংগ্রেস, কিন্তু ঝুলে রইল রাজস্থান এবংছত্তিশগ। ছত্তিশগড় নিয়ে বিশেষ জটিলতা না থাকলেও, রাজস্থান নিয়ে জট বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্তও কাটেনি। মধ্য প্রদেশের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা কমলনাথ। বৃহস্পতিবার রাতে ট্যুইটে সরকারিভাবে এই ঘোষণা করে কংগ্রেস। এর সাথে সাথেই কমলনাথ না জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কে হবেন মধ্য প্রদেশের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী, ইতি পড়ল সেই জল্পনাতেও। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জ্যোতিরাদিত্য ও কমলনাথের সঙ্গে নিজের একটি ছবি ট্যুইট করেছিলেন রাহুল। তখনই বোঝা গিয়েছিল মধ্য প্রেদেশ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। সূত্রের খবর, এদিন দিল্লিতে রাহুলের সাথে দেখা করে প্রথমে পৃথক পৃথকভাবে ও পরে একসঙ্গে বৈঠক করেন জ্যোতিরাদিত্য ও কমলনাথ। রাহুলের সঙ্গে কথা হয় সোনিয়া গান্ধীর। রাহুলের বাড়িতে যান প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। দফায় দফায় বৈঠকের পর কাটে জট, রাহুলের বাসভবন থেকে একে একে বেরিয়ে যান জ্যোতিরাদিত্য, কমলনাথ, প্রিয়াঙ্কা।
কমলনাথ ভোপাল পৌঁছোনোর খানিক পরেই সরকারিভাবে কংগ্রেস মধ্য প্রদেশের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কমলনাথের নাম ঘোষণা করে তাঁকে শুভেচ্ছা জানায়। ১৫ বছরের বিজেপি শাসনের পর প্রবল প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া সত্ত্বেও মধ্য প্রদেশে কংগ্রেসকে কষ্টার্জিত জয় অর্জন করতে হয়েছে। ২৩০ আসন বিশিষ্ট বিধানসভায় সরকার গঠনের ম্যাজিক ফিগার ১১৬ জোগাড় করতে পারেনি কংগ্রেস। আটকে গেছে ১১৪ তে। সরকার গড়তে তাদের সাহায্য নিতে হচ্ছে সপা, বসপা ও কিছু নির্দল বিধায়কের। কমলনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায়, জ্যোতিরাদিত্যকে সেখানে উপমুখ্যমন্ত্রী অথবা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করা হতে পারে বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর।
অন্যদিকে, মধ্য প্রদেশের তুলনায় রাজস্থানে কংগ্রেসের ফল তুলনায় কিছুটা ভাল হলেও, মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে জটিলতা এখনও অব্যাহত। এখানে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করতে পেরেছে রাহুল গান্ধীর দল। শচীন পাইলট না অশোক গেহলট কে হবেন রাজস্থানের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী তা ঠিক করতে বৃহস্পতিবার দিল্লি ডেকে পঠানো হয় এই দুই নেতাকে। তাঁদের সাথে আলাদা আলাদাভাবে কথা বলেন রাহুল। এমনকী হাই কম্যান্ডের ডাকে বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসতে হয় গেহলটকে। রাজস্থানের বিষয়ে শুক্রবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ঘিরে প্রকাশ্যে এসেছে পাইলট ও গেহলট সমর্থকদের সংঘাত। সূত্রের খবর, কংগ্রেস হাইকমান্ড ও জয়ী কংগ্রেস বিধায়কদের সিংহভাগ বর্ষীয়ান গেহলটের পক্ষেই। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শচীন পাইলটও হাল ছাড়তে নারাজ। তাঁর সমর্থকদের দাবি, শচীনের নেতৃত্বেই রাজ্যে লড়েছে কংগ্রেস, তাই মুখ্যমন্ত্রিত্ব তারই প্রাপ্য। যদিও পাইলট নিজে সমর্থকদের শান্ত থাকার আবেদন জানিয়ে বলেছেন, হাইকমান্ড যা সিদ্ধান্ত নেবে, তাই শিরধার্য।
রাজস্থানের মতো ঝুলে আছে ছত্তিশগড়ের ভাগ্যও। এখানে ৬৮ টি আসন পেয়ে আশাতীত সাফল্য পেয়েছে কংগ্রেস। কার্যত ধুয়ে গেছে রমন সিংহের বিজেপি। কিন্তু এখানেও মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা ঠিক করতে পারেনি কংগ্রেস। লড়াই মূলত টি এস সিংহ দেও এবং রুপেস বাঘেলের মধ্যে। এই দুই নেতাকেই শুক্রবার দিল্লি তলব করেছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। রাজস্থানের পাশাপাশি ছত্তিশগড় নিয়েও এদিন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভবনা।

Comments are closed.