বাইরের তুলনায় অনেক বেশি মানুষ সংক্রমিত ঘরে বসে! দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকদের রিপোর্টে তোলপাড়

কোভিড সংক্রমণ রুখতে বিশ্বজুড়ে প্রয়োগ হয়েছে লকডাউন। এর ফলে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছিল প্রায় গোটা বিশ্ব। উদ্দেশ্য, সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙা। কিন্তু জানেন কি, বাড়ি বন্দি হয়ে থেকেই অনেক বেশি মানুষ করোনা সংক্রমিত হয়েছেন? এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকদের। যা নিয়ে তোলপাড় দুনিয়া।

আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার কয়েকজন এপিডেমিওলজিস্ট জানিয়েছেন, বাইরের তুলনায় অনেক সহজে বাড়ির ভিতরে পরিবারের এক সদস্য থেকে অন্য সদস্যের শরীরে থাবা বসাতে পারে করোনাভাইরাস।

১৬ জুলাই আমেরিকার সেন্টার্স ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনে (CDC) প্রকাশিত এই সমীক্ষায় ৫ হাজার ৭০৬ জন করোনা পজিটিভ মানুষের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁদের সংস্পর্শে আসা ৫৯ হাজার মানুষের একটি তথ্য তুলে দেখানো হয়েছে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে মাত্র দু’জন মানুষ বাইরে বেরিয়ে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। উল্টোদিকে প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন সংক্রমিত হয়েছেন লকডাউন মেনে বাড়িতে থেকেই।

বয়সের বিচারে পরিবারের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি কিশোর এবং ৬০-৭০ বছর বয়সী সদস্যদের মধ্যে। এর কারণ হিসেবে কোরিয়া সেন্টারস ফর জিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (KCDC) এর ডিরেক্টর জিয়ং ইউন কায়ং জানিয়েছেন, পরিবারের মধ্যে এই বয়সের সদস্যরা সাধারণত শারীরিকভাবে একে অন্যের বেশি ঘনিষ্ঠ থাকেন বলে তাঁদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া বয়স্কদের চেয়ে বেশি সংখ্যক শিশু উপসর্গহীন হওয়ায় এই বয়সীদের চিহ্নিত করাও কঠিন হচ্ছে বলে সমীক্ষায় প্রকাশ। শিশুরা তুলনামূলকভাবে করোনাভাইরাসে কম সংক্রমিত হতে পারে বলে মনে করা হলেও এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকরা।

২০ জানুয়ারি থেকে ২৭ মার্চের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সময় সংশ্লিষ্ট সমীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সোমবার নতুন করে দক্ষিণ কোরিয়ায় ৪৫ টি সংক্রমণের খবর দিয়েছে কেসিডিসি। দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ১৩ হাজার ৮১৬ এবং মৃত্যু হয়েছে ২৯৬ জনের। সারা বিশ্বে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন দেড় কোটি মানুষ, মারা গিয়েছেন ৬ লক্ষেরও বেশি।

Comments are closed.