করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে আরও এক কদম এগোলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। শুক্রবার থেকে করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ শুরু করল অক্সফোর্ড।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে তারা জানায়, প্রথম পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য ১ হাজার স্বাস্থ্যবান ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। এবার ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য ১০ হাজার ২৬০ জন্য স্বেচ্ছাসেবী চাইছেন তাঁরা। এই পর্যায়ে যুবকদের পাশাপাশি ৫৬ থেকে ৭০ বছর বয়সী প্রৌঢ় ও ৫ থেকে ১২ বছরের বাচ্চাদের প্রয়োজন বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। থার্ড ফেজের ভ্যাকসিন ট্রায়ালে আরও বিপুল সংখ্যক মানুষের শরীরে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন প্রয়োগ হবে পরীক্ষামূলকভাবে।
জেনার ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিনোলজিস্ট তথা গবেষণার নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক সারা গিলবার্ট বলেন, ইতিমধ্যেই বহু প্রৌঢ় উৎসাহ দেখিয়েছেন। তাই তাঁদের এই গবেষণায় যুক্ত করা হবে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে এই গবেষণা চালানো হচ্ছে। ChAdOx1 nCoV-19 (করোনা ভ্যাকসিন) মানব শরীরে কতটা নিরাপদ এবং কার্যকরী তার পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বলে জানান সারা গিলবার্ট।
এপ্রিল মাসে প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করে অক্সফোর্ড। সেখানে এক হাজার জনের উপর পরীক্ষা হয়েছিল। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের প্রধান প্রফেসর অ্যান্ড্রু পোলার্ড জানিয়েছেন, ক্লিনিক্যাল স্টাডিজে আশাব্যঞ্জক ফল মিলেছে। এখন আমরা দেখতে চাইছি বয়স্কদের উপর এই ভ্যাকসিন কতটা কার্যকরী হয় এবং বিপুল জনগণের কাছে এই ভ্যাকসিন নিরাপদ হচ্ছে কিনা। দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার ফলাফল চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই মিলে যাবে আশা করছেন গবেষকরা। তারপর তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে দেখা হবে বিপুল সংখ্যক বিভিন্ন বয়সের মানুষ বিশেষ করে ১৮ বছরের উপর বয়সীদের উপর এই ভ্যাকসিনের প্রভাব কেমন। তার উপর নির্ধারিত হবে কোভিড-১৯ ঠেকাতে কতটা কার্যকর অক্সফোর্ডের গবেষকদের তৈরি প্রতিষেধক।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে প্রাপ্তবয়স্কদের এক থেকে দুই ডোজ ChAdOx1 nCoV-19 ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, ChAdOx1 nCoV-19 আসলে ChAdOx1 ভাইরাস থেকে তৈরি। শিম্পাঞ্জির শরীরে সংক্রমণ ঘটায় এমন একটি সাধারণ কোল্ড ভাইরাস (অ্যাডেনোভাইরাস) এর একটি দুর্বল সংস্করণ হল ChAdOx। জেনেটিকভাবে এটি এমনভাবে পরিবর্তিত হয়েছে যাতে মানব শরীরে এর পুনরাবৃত্তি অসম্ভব।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বায়োফার্মা সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা (AstraZeneca) এর সঙ্গে চুক্তি করেছে। যাতে পরীক্ষা সফল হলেই উৎপাদিত ভ্যাকসিন দ্রুত বাজারে আনা যায়।
Comments are closed.