বিশ্বে বন্ধ, ভারতে অক্সফোর্ডের করোনা টিকার ট্রায়াল জারি কেন? পুণের সেরাম ইন্সস্টিটিউটকে শো-কজ DCGI এর
চূড়ান্ত ট্রায়ালে এক স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় বিদেশে অক্সফোর্ড টিকা কোভিশিল্ডের ট্রায়াল বন্ধ। কিন্তু কেন্দ্রকে তা না জানানোয় শো-কজ নোটিস পাঠানো হল সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (SII) কে। ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে, বিদেশে কোভিশিল্ড ট্রায়াল বন্ধের পর কেন তা ভারতে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে?
এক স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে টিকার পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় ব্রিটেনে আপাতত মুলতুবি রাখা হয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ট্রায়াল। কিন্তু অভিযোগ, ভারতে সেই খবর কেন্দ্রীয় সরকারকে জানায়নি সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। তার জেরেই সেরাম ইনস্টিটিউটকে শো-কজ করল কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (DCGI)।
অক্সফোর্ড টিকা কোভিশিল্ডের চূড়ান্ত ট্রায়াল সফল হলে, ভারতে তা উৎপাদন করবে পুনের সংস্থা, তারই ট্রায়াল চলছিল জোরকদমে। কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউটকে পাঠানো শো-কজ নোটিসে ড্রাগ কনট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া, ভিজি সোমানি ব্যাখ্যা চেয়েছেন, যতদিন টিকার সুরক্ষা প্রমাণ না হচ্ছে ততদিন কেন ক্লিনিকাল ট্রায়ালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের অনুমতি প্রত্যাহার করা হবে না?
বিদেশে অক্সফোর্ড টিকা কোভিশিল্ডের ট্রায়াল বন্ধ সংক্রান্ত কোনও তথ্য সেরাম ইনস্টিটিউট না দেওয়ায় কেন তাদের ট্রায়াল চালানোর অনুমতি প্রত্যাহার করা হবে না, সেই প্রশ্নও করেছে ডিসিজিআই। নোটিসে বলা হয়েছে, কোনও উত্তর না দিলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে দেশের ড্রাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বুধবার সেরাম ইন্সটিটিউট জানিয়েছে, ডিসিজিআই-র অনুমতিক্রমেই ট্রায়াল চালানো হয়েছে এবং এ পর্যন্ত ট্রায়াল বন্ধের ব্যাপারে কোনও নির্দেশ আসেনি। ডিসিজিআইয়ের সেফটি কনসার্ন থাকলে আমরা অবশ্যই সে নির্দেশ মেনে চলব এবং স্টান্ডার্ড প্রোটোকল মেনেই কাজ হবে।
করোনা থেকে বিশ্ববাসীকে স্বস্তি দিতে যে টিকাগুলি আশার আলো দেখাচ্ছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম নাম অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা। বিভিন্ন দেশে কোভিশিল্ডের তৃতীয় তথা চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল চলছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সুইডিশ-ব্রিটিশ বায়োটেক সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানায়, একজন স্বেচ্ছাসেবকের অসুস্থতার কারণে চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার মুখপাত্র মিশেল মেক্সেলের বিবৃতি উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানায়, টিকাকরণের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থা। একটি স্বতন্ত্র কমিটি ‘সেফটি ডেটা’ (সুরক্ষাজনিত তথ্য) পর্যালোচনা করবে।
ব্রিটেনের এক স্বেচ্ছাসেবকের ‘সন্দেহজনক গুরুতর বিরূপ প্রতিক্রিয়া’র জন্য কোথায় কোথায় ট্রায়াল স্থগিত রাখা হচ্ছে, সে বিষয়ে অবশ্য স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি। এদিকে আমেরিকা, ব্রিটেন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ইতিমধ্যেই অক্সফোর্ড টিকার ট্রায়াল বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে খবর। কিন্তু ভারতে সেরকম কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার প্রশ্ন নেই বলে আগে জানিয়েছিল সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। বুধবার পুনের সংস্থার তরফে বলা হয়, ব্রিটেনের ট্রায়াল নিয়ে বিশেষ কিছু বলা সম্ভব নয়। ভারতে ট্রায়াল চলছে কারণ এখনও কোনও সমস্যা হয়নি বলে জানায় সেরাম ইনস্টিটিউট।
অক্সফোর্ডের এই টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করছিল পুনের সংস্থা। ১৭ রাজ্যে প্রায় ১,৬০০ স্বেচ্ছাসেবীর উপর এই ট্রায়াল চালানো শুরু করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া।
Comments are closed.