৭২ ঘণ্টায় ২ শিশুর মৃত্যু ডেঙ্গিতে, ছড়াচ্ছে আতঙ্ক

রাজ্যে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার সকালে কলকাতা মেডিকেল কলেজে সুনীধি সরকার নামে ৫ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়। বাড়ি শ্রীরামপুরের কে এল গোস্বামী স্ট্রিটে। ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। মৃতের পরিবার জানিয়েছে, গত ১২ তারিখে সুনীধির জ্বর হয়। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। তাকে শ্রীরামপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতা মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার সকালে সে মারা যায়।
গত রবিবারই লেকটাউনের এ ব্লকের বাসিন্দা অহর্ষি ধর নামে তিন বছরের এক শিশু মারা যায় দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি শিশু হাসপাতালে। মৃত্যুর পর অহর্ষির চোখ দুটি দান করার সিদ্ধান্ত নেন তার বাবা-মা। গত বুধবার রাত থেকে তার প্রবল জ্বর হয়। বৃহস্পতিবার ভর্তি করা হয়েছিল ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে। পরিবার সূত্রে খবর, প্লেটলেট কমতে কমতে ২৪ হাজারে এসে দাঁড়ায়। প্লেটলেট দিয়েও কোনও কাজ হয়নি। রবিবার রাতে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। অহর্ষির মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে দায় ঠেলাঠেলি। কলকাতার ডেপুটি মেয়র এবং স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষের দাবি, মাত্রাতিরক্ত ফ্লুইড দেওয়ার ফলেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। ওই হাসপাতালের পাল্টা দাবি, অতিরিক্ত ফ্লুইড দেওয়া হয়নি। সমস্ত প্রোটোকল মেনেই চিকিৎসা হয়েছে।
নভেম্বর মাস শেষ হতে চলল। একটু একটু ঠান্ডাও অনুভব করা যাচ্ছে সকালে এবং রাতে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ডেঙ্গির প্রকোপ কমছে না। হাওড়া শহর, উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি, ভাটপাড়া, খড়দহ, হাবড়া, দেগঙ্গা, লেকটাউন, দমদম, বেলগাছিয়া প্রভৃতি এলাকায় বিভিন্ন বয়সের বহু মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছে এখনও। অনেকের চিকিৎসা হচ্ছে বাড়িতে। অনেকে ভর্তি হাসপাতালে। বেসরকারি সূত্রে খবর, এ বছর মৃত্যুর সংখ্যা ৬০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। যদিও রাজ্য সরকার এবং কলকাতা পুরসভা তা স্বীকার করতে চাইছে না। ২০১৭ সাল থেকেই এই সব এলাকায় ডেঙ্গির আতঙ্কে জেরবার হয়ে চলেছেন স্থানীয়রা। গত বছর উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল বেশ কয়েক হাজার। এবারও দেগঙ্গায় জ্বর ও ডেঙ্গি প্রায় ঘরে ঘরে। ওই জেলার হাবরা অশোকনগরে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গির থাবায় মারা গিয়েছেন ২৩ জন।

Comments are closed.