চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, কোনও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনার ধার ধারে না বিজেপি। হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটিতে গুজব ছড়ানোই তাদের কাজ। রাজ্যব্যাপী সপ্তাহে দু’ দিন লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের জবাব দিলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন।
চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতি ও শনিবার সারা রাজ্যে লকডাউন হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল মমতা সরকার। বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রাম লাইভ থেকে ডেরেক বলেন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল ও সংবাদমাধ্যম না বুঝে লকডাউন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছে। ডেরেকের কথায়, সংক্রমণ ঠেকাতে এপিডেমিওলজিস্টরা দু’সপ্তাহ কড়া লকডাউনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা এই পরামর্শ পুরোপুরি মানতে পারেননি। এই প্রেক্ষিতে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্সেস (IISC) এর একটি গাণিতিক মডেলের সাহায্য নেন তাঁরা।
ডেরেকের দাবি, আইআইএসসি-র এই গাণিতিক মডেলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যের ১ লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হতে পারেন করোনায়। তবে সপ্তাহে একদিন করে লকডাউন করলে সংক্রমণ শৃঙ্খল ভেঙে আক্রান্তের সংখ্যা হতে পারে ৪০ হাজার এবং সপ্তাহে দু’দিন লকডাউন করলে এই সংখ্যা নেমে আসতে পারে ২০ হাজারে। এই অবস্থায় টানা দু’দিন লকডাউন না করে দুই-তিন দিনের ব্যবধানে লকডাউনের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
ডেরেক এও জানিয়েছেন, গাণিতিক মডেল যে পুরোপুরি কাজ করবে তার কোনও গ্যারান্টি নেই। কীভাবে মানুষ সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মানছেন, মাস্ক পরছেন কিনা, সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলছেন কিনা তার উপরও সংক্রমণ মাত্রা নির্ভর করে। তবু সংক্রমণ রোধে বৈজ্ঞানিক নীতির প্রয়োগ তো করতেই হবে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল, সংবাদমাধ্যম তাদের ‘নন সায়েন্টিফিক এজেন্ডা’ দিয়ে এই লকডাউনের বিরোধিতা করছে বলে মন্তব্য ডেরেক ও’ব্রায়েনের। তিনি বলেন, বাংলাই প্রথম কোভিড এমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করেছে। প্রথম যখন তাঁরা কো-মর্বিডিটির কথা বলেছিলেন তখন সমালোচনা হয়েছিল। পরে কেন্দ্রও তাকে মান্যতা দিয়েছে।
তৃণমূল সাংসদের কটাক্ষ, মার্চ মাসে মাত্র চার ঘণ্টার নোটিসে লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বাংলার মানুষকে লকডাউনের আগে প্রস্তুত থাকার জন্য পাঁচদিন সময় দেয় মমতার সরকার। এই ‘মানবিক’ লকডাউন আসলে মানুষেরই সুরক্ষার স্বার্থে কিন্তু তার অপব্যাখ্যা করছে বিরোধীরা, মন্তব্য ডেরেক ও’ব্রায়েনের।
Comments are closed.