পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক সদর কাঁথি থেকে সরাচ্ছেন মমতা, তমলুকে প্রার্থী নতুন জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র?
নন্দীগ্রামের সভা থেকে জেলা নেতৃত্বকে কী বার্তা দেবেন তৃণমূল নেত্রী?
২০০১ সালের জানুয়ারি মাস। মেদিনীপুর ভেঙ্গে তৈরি হল নতুন জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। ঘটনাচক্রে তার কয়েক মাসের মধ্যেই ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা যাওয়ার রাস্তায় একটি ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে রাজ্যে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। ওই ঘটনার পর সদ্য গঠিত জেলার এক উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তা ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছিলেন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা চালানো সবচেয়ে সহজ। কারণ হলদিয়া চালান লক্ষ্মণ শেঠ, কাঁথি চালান শিশির অধিকারী, দিঘা চালায় পুলিশ, তমলুক চালান ডিএম।
তারপর হলদি-রূপনারায়ণ দিয়ে বহু জল বয়ে গেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণের বদলের ফলে জেলার সদর দফতর হয়ে উঠেছিল কাঁথি। বস্তুত অধিকারী পরিবারের নির্দেশেই চলত গোটা জেলা। সেই পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সদর তমলুকে ফেরানোর উদ্যোগ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি।
সূত্রের খবর, জেলার ক্ষমতার ভরকেন্দ্র কাঁথি থেকে তমলুকে ফেরাতেই সম্ভবত এই কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চলেছেন সদ্য নিযুক্ত জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের ১ মাসের মধ্যেই জেলা সভাপতি বদল করেছেন মমতা ব্যানার্জি। ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে সভা করবেন মমতা। শুভেন্দু অধ্যায়ের পর এই প্রথম নন্দীগ্রামে পা রাখবেন তৃণমূল নেত্রী। সূত্রের খবর, নন্দীগ্রামের সভা থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরে অধিকারী মুক্ত তৃণমূলের সংগঠন গড়ার ডাক দেবেন দল নেত্রী।
এদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের ১৬ টি বিধানসভা আসনে নতুন প্রার্থী কারা হবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু করে দিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব বলে জানা যাচ্ছে। নেতৃত্ব বলছে, ২ বিধায়ক গেছেন, আরও ২-৩ জন বিধায়ক তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানতে পেরেছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই এবার পূর্ব মেদিনীপুরের জন্য নয়া কৌশল আমদানি করতে চলেছে তৃণমূল। সূত্রের খবর, মমতা ব্যানার্জি দলের পুরনো কর্মীদের সম্মান দিয়ে আবার দলের কাজে ফেরাচ্ছেন। তৃণমূল নেত্রী এবার পুরনোদের দিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন। সূত্রের খবর, সোমবার নন্দীগ্রাম থেকেই জেলার সামনের সারির নেতৃত্ব ঠিক করার পাশাপাশি আগামী লড়াইয়ের স্পষ্ট বার্তা দেবেন মমতা ব্যানার্জি।
সবমিলিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর নিয়ে কার্যত সম্মুখ সমরে তৃণমূল ও অধিকারী পরিবার।
Comments are closed.