মাত্র কয়েক বছর আগে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ মাথায় নিয়ে সরে গিয়েছিলেন তিনি। আজ তাঁকে নিয়েই মাতোয়ারা গোয়া। গোয়াতে করোনা মোকাবিলায় অভূতপূর্ব সাফল্যের নেপথ্যে ডাক্তার এডুইন গোমস।
প্রায় এক দশক আগে এডুইন গোমসের বিরুদ্ধে ডাক্তারির তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। সাসপেন্ড করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হন। দেওয়া হয় গোয়া মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের দায়িত্ব। এবার সেই ডাক্তারবাবুর হাত ধরেই দেশের প্রথম করোনা মুক্ত রাজ্য হিসেবে উঠে এল গোয়া।
দেশের প্রথম করোনা মুক্ত রাজ্য হিসেবে গোয়ার নাম উঠে আসতেই এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ডাক্তার, নার্স সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের টুইটারের মাধ্যমে অভিনন্দন জানান রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্বজিৎ রানে। গোয়ায় ৭ জনের শরীরে ধরা পড়ে করোনাভাইরাস। এই মুহূর্তে ৭ জনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে খবর।
একটি টুইটের মাধ্যমে রানে এই কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দেওয়া ৫৮ বছরের ডাক্তার গোমস ও তাঁর দলের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে অসামান্য অবদানকে কুর্নিশ জানান।
কিন্তু করোনা সংক্রমণ শুরুর থেকেই কিছুটা ব্যাকফুটে ছিল গোয়া। রাজ্যে নেই কোনও টেস্টিং ল্যাব। ছিলেন না কোনও প্রশিক্ষিত মাইক্রো বায়োলোজিস্টও। এছাড়া গোয়ায় প্রচুর পর্যটক আসেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ফলে অনেক মানুষের সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা বাড়ে বহুগুণ। এছাড়াও পাশেই মহারাষ্ট্র, যেখানে সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা দেশে সর্বাধিক। এই অবস্থায় রাজ্যকে করোনা মুক্ত করতে নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন ডঃ গোমস ও তাঁর দলের সদস্যরা।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যে ডেডিকেটেড হসপিটাল তৈরি করা হয়েছিল গোয়া সরকারের পক্ষ থেকে, গোমস ছিলেন সেই হসপিটালের নোডাল অফিসার-ইন-চার্জ। কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে তৈরি তিনটি টিমের নেতৃত্বের ভারও ছিল তাঁর কাঁধেই।
ডাঃ গোমসের চিকিৎসা পদ্ধতিরও প্রশংসা চলছে রাজ্যজুড়ে। তিনি যেভাবে রোগীদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিনিয়ত ভরসা যুগিয়ে গিয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়, জানাচ্ছেন, সদ্য সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীরা। তাঁরা বলছেন, গোয়ার এই বেনজির করোনা যুদ্ধে নায়ক হিসেবে লেখা থাকবে ডাক্তার এডুইন গোমসের নাম।
Comments are closed.