পদত্যাগী আইএএস গোপীনাথন শুক্রবার কলকাতায় আসছেন মানবাধিকার নিয়ে বলতে

মানবাধিকার নিয়ে কথা বলতে ও শুনতে শুক্রবার কলকাতায় আসছেন চাকরি ছেড়ে দেওয়া প্রাক্তন আইএএস অফিসার কন্নন গোপীনাথন। ৩৭০ ধারা রদ করে জম্মু-কাশ্মীরে মানবাধিকার হরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ গোপীনাথনের। সেই অভিযোগকে সামনে রেখেই কেরল ক্যাডারের আইএএস অফিসার তেত্রিশ বছরের গোপীনাথন চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন গত অগাস্ট মাসে। এতেই ক্ষুব্ধ হন দাদরা ও নগর-হাভেলিতে কর্মরত ওই সরকারি আমলা। তাঁর মনে হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরের নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে, কথা বলার স্বাধীনতাকেও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে সরব হয়েছেন। আর প্রতিবাদের চরম অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন সরকারি পদে ইস্তফাকে। এখন ইতনি মুক্ত পুরুষ। গোটা দেশে ঘুরে মানবাধিকার নিয়ে প্রচার চালাতে চান তিনি। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সঙ্গেও কথা বলতে চান। তারই অঙ্গ হিসেবে শুক্রবার এই প্রাক্তন আমলা কলকাতায় আসছেন মানবাধিকার সংক্রান্ত এক আলোচনায় যোগ দিতে। জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা রদ নিয়ে সিদ্ধান্তের ১০০ দিন পূর্ণ হল বুধবারই। শুক্রবার তাঁর কলকাতায় আসাটা তাই কিছুটা তাৎপর্যপূর্ণও বটে।
দিনকয়েক আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাঁকে জানিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে চলেছে সরকার। তাতে অবশ্য দমার পাত্র নন গোপীনাথন। তাঁর কথায়, আমার আর কীসের পিছুটান? এখন আমি স্বাধীন মুক্ত পুরুষ। ইস্তফা দিয়ে মানবাধিকারের কথা বলায় আমার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদী গোপীনাথন অবশ্য জম্মু-কাশ্মীর ক্যাডারের আইএএস অফিসার শাহ ফয়জলের মতো আইএএস-গিরি ছেড়ে রাজনীতিতে আসতে চান না। তাঁর একান্ত ইচ্ছা, সারা দেশে ঘুরে ঘুরে মানুষের অধিকারের কথা বলা, সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। এখনও পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন রাজ্যে বেশ কয়েকটি আলোচনায় সভায় অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষের অভূতপূর্ব সমর্থন পেয়েছেন। সেই সব সভার আয়োজক কারা, তা নিয়ে গোপীনাথনের কোনও মাথাব্যথা নেই। তাই কলকাতার আলোচনা সভার উদ্যোক্তা আমন্ত্রণ করার পর এক কথাতেই তিনি রাজি হয়ে গিয়েছেন। শহরের মানবাধিকারের সঙ্গে জড়িত মানুষ গোপীনাথনের কথা শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২১ অগাস্ট আইএএস পদে ইস্তফা দেওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, যাঁদের কথা বলতে দেওয়া হয় না, তাঁদের হয়ে কথা বলব বলেই সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি আমি নিজের কণ্ঠস্বরই হারিয়ে ফেলেছি। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ গত ২০ দিন ধরে কথা বলার অধিকার হারিয়ে ফেলে এক অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এ তো মারাত্মক অবস্থা! মোদী সরকারকে তিনি অপদার্থ বলতেও ছাড়েননি।

 

Comments are closed.