অমর্ত্য সেন থেকে রোমিলা থাপার, জয় বাংলা স্লোগান থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব থেকে বাঙালি তরুণ-তরুণী। মেঘালয়ের গভর্নর তথাগত রায়ের বেলাগাম আক্রমণের মুখে পড়েননি, এমন লোক হালফিলে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এবার বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির আক্রমণের মুখে পড়লেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। সুজন চক্রবর্তীর একটি ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিন শট পোস্ট করে রাজ্যপাল তথাগত রায় লিখলেন, মুসলিমদের ভয়ে বরিশালের বাড়ি ছেড়ে শ্যামাপ্রসাদের পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে এসেছিলেন সুজন চক্রবর্তীরা।
বিতর্কের সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠকে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছিলেন, বিভাজনের ফলে তৈরি হওয়া মানুষের সঙ্কট এবং আজ বাংলার অধোগতির জন্য অনেকাংশে দায়ী বাংলার বিভাজন। সেই বিভাজনের কুশীলব শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, বিজেপির পতাকা হাতে নিয়ে তাঁকে মডেল হিসেবে যাঁরা দেখতে চাইছেন, তাঁরা আসলে বাংলার সর্বনাশ করতে চাইছেন। বিজেপি বাংলা বিরোধী, বাঙালি বিরোধী, বলেন সুজন চক্রবর্তী। একই কথা লিখে ফেসবুকে সেদিনের সাংবাদিক সম্মেলন শেয়ারও করেন এই বাম নেতা।
সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য নিয়ে বঙ্গ বিজেপির সদর দফতর মুরলিধর সেন লেন থেকে কোনও জবাব আসার আগেই, প্রতিক্রিয়া এল মেঘালয়ের রাজধানী থেকে। শিলংয়ের রাজভবনে বসে রাজ্যপাল তথাগত রায় ফেসবুকে করে বসলেন আরও এক বিস্ফোরক দাবি। লিখলেন, ‘বিজেপি সম্বন্ধে কিছু বলছি না। কিন্তু সুজনবাবুদের বাড়ি তো ‘ছিল’ বরিশালে! সে বাড়ি কি ঝড়ে উড়ে গেছে? তা নয়, বাড়ি ঠিকই আছে, সুজনবাবুরাই সেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। কেন পালিয়েছেন? মুসলমানের অত্যাচারে! কোথায় পালিয়েছেন? সেই পশ্চিমবঙ্গে, যা সৃষ্টি করেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ’।
তথাগত রায়ের এই পোস্টের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সুজন চক্রবর্তী। তথাগত রায় বেআইনিভাবে রাজ্যপালের চেয়ার আঁকড়ে বসে আছেন, অভিযোগ সুজন চক্রবর্তীর। নিরপেক্ষতার শর্তেই কাউকে রাজ্যপাল করা হয়। তথাগতবাবু যেটা করছেন, তাকে আর যাই হোক নিরপেক্ষ বলা যায় না। মন্তব্য সুজন চক্রবর্তীর। পাশাপাশি তাঁর কটাক্ষ, আরএসএসের অন্ধ ভক্ত তথাগত রায় আবোল তাবোল বলে ইতিহাস গুলিয়ে দিতে চাইছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গভঙ্গ রোধ করতে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন আর শ্যামাপ্রসাদ বাংলা ভাগের সমর্থক ছিলেন। এবার মানুষ বুঝে নিক, বাঙালি জাতিসত্বাকে দ্বিখণ্ডিত করে সামগ্রিকভাবে বাঙালি জাতি এবং বাংলার অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করে দেওয়ার দায় কার। বলছেন সুজন চক্রবর্তী।
Comments are closed.