কোভিড রোগীকে ভর্তি নেয়নি আহমেদাবাদের হাসপাতাল। হাসপাতালের বাইরেই দীর্ঘক্ষণ শ্বাসকষ্টের পর মৃত্যু হল বাঙালি অধ্যাপকের। কাঠগড়ায় বিজেপি শাসিত গুজরাটের সরকারি হাসপাতাল।
মৃত করোনা সংক্রমিত রোগী গুজরাট কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব নিউরোসায়েন্সের ডিন প্রোফেসর ইন্দ্রাণী ব্যানার্জি। চিকিৎসা পাওয়ার জন্য শুক্রবার রাত থেকে একের পর এক হাসপাতালে ছোটাছুটি করার পরেও শেষরক্ষা হয়নি। রবিবার তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
কোভিড চিকিৎসার জন্য তাঁকে আহমেদাবাদের (এএমসি) কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অভিযোগ নির্ধারিত অ্যাম্বুলেন্সে না আসার কারণে তাঁকে ফিরিয়ে দেয় হাসপাতাল। ইন্দ্রাণী ব্যানার্জির ছাত্রছাত্রীদের কাছে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই ওই অধ্যাপক শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। জানা যায় তিনি কোভিড পজিটিভ। শুক্রবার রাত থেকে সমস্যা বাড়তে থাকে। তাঁর এক ছাত্রী জানিয়েছেন, সেইসময় অক্সিজেন স্যাচুয়েশন লেভেল নেমে গিয়েছিল ৯০ থেকে ৯২ তে। তাঁকে প্রথমেই নিয়ে যাওয়া হয় গান্ধীনগর সিভিল হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে খালি বেড ছিল না। অন্য বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহকর্মীদের অনুরোধ করেন ইন্দ্রাণী। কিন্তু ওই বেসরকারী হাসপাতালও জানিয়ে দেয় সেখানে বাইপ্যাপ অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর এবং ভেন্টিলেটরের অভাব রয়েছে। তাই ইন্দ্রাণীর চিকিৎসা সম্ভব নয়।
শনিবার তাঁকে আহমেদাবাদের মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (এএমসি) কোভিড হাসপাতালে নিয়ে আসতে বাধ্য হন ইন্দ্রাণীর ছাত্র ছাত্রীরা। কিন্তু সেখানে অন্য বিপত্তি।
বিশেষ ইএমআরআই ১০৮ অ্যাম্বুলেন্সে আনা হয়নি বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয় কোভিড রোগী ইন্দ্রাণী ব্যানার্জিকে। তাঁকে ফের নিয়ে আসা হয় গান্ধীনগর সিভিল হাসপাতালেই। ততক্ষণে ইন্দ্রাণী ব্যানার্জির দেহে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে গিয়েছিল ৬০-এ। রাত ২ টোর সময় কোনওরকমে একটি বাইপ্যাপ অক্সিজেন মেশিন জোগাড় হয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। মৃত্যু হয়েছে ইন্দ্রাণী ব্যানার্জির।
ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার থেকে ফিজিক্সে পিএইচডি করেছিলেন ইন্দ্রাণী ব্যানার্জি। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিকাল অ্যান্ড এ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিজ্ঞানীও ছিলেন তিনি। পাশাপাশি গুজরাটে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব নিউরোসায়েন্সে অধ্যাপনা করতেন।
Comments are closed.