“মা ডিভোর্সি হলে মেয়ে তো এরকম হবেই” – ঐন্দ্রিলার পোস্টের কমেন্ট সেকশনে বর্তমানের বাস্তব প্রতিফলিত হলো, ভাইরাল পোস্ট
২০২২ সালের সবেমাত্র কেটেছে দুর্গাপূজা। আজ দ্বাদশী আর তার মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে মেয়েদেরকে বাঁকা নজরে দেখা। বিবাহিত-অবিবাহিত, বিধবা, ডিভোর্সি যাই হোক না কেন কোন মেয়েকেই সমাজ সোজা নজরে দেখতে পারেনা। এমনই একটি বাস্তব প্রতিফলন ঘটলো টেলি অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার পোস্টে। সম্প্রতি অভিনেত্রী বেইন্দ্রিলা একটি বাংলা স্ট্রিমিং অ্যাপের পক্ষ থেকে কিছু ছবি পোস্ট করছিলেন। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে সেই ছবি শেয়ার করেছিলেন তিনি।
সেই ছবিতে অভিনেত্রীকে দেখা যাচ্ছে তিনি হাতে একটি কাগজ নিয়ে দাঁড়ানো। যেখানে লেখা “মা ডিভোর্সি হলে মেয়ে তো এরকম হবেই।” #OkayNotOkay ও ব্যবহার করা হয়েছিল ওই পোস্টটিতে। “বোধন” নামের একটি ওয়েব সিরিজের জন্য এ ধরনের পোস্ট করছিলেন কলাকুশলীরা। এই ছবি শেয়ার করে অভিনেত্রী ক্যাপশনে লিখেছিলেন, “মহিলাদের প্রতিদিন অনেক ধরনের কথা শুনতে হয়। এবার সেইসব কথা দূরে সরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসে গিয়েছে”। কিন্তু সেখানেই উত্তম রায় নামের এক জনৈক কমেন্ট করেন, “তবে কথাটি ১০০ শতাংশ ভুলও নয়।” এই কমেন্টটিকে ফেসবুকে রিপোস্ট করে টেলি অভিনেত্রী আবার লেখেন, “আজ হইচইয়ের জন্য একটি পোস্ট করেছিলাম। তাতে এই কমেন্টটি পেলাম। সত্যি মানসিকতার বদল না ঘটলে সমাজ বদলাবে না। মায়ের বিসর্জন হতে না হতেই মাকে রাস্তায় টেনে নামানো শুরু।”
মেয়েদের জীবন সমাজের দাসত্ব গ্রহণ করে নিতে বাধ্য হচ্ছে। সম্পূর্ণ বিষয়টিকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন অভিনেত্রী। এক বিশিষ্ট সংবাদ মাধ্যমকে অভিনেত্রী জানান, “আমার পোস্টের প্রথম কমেন্টই ছিল, ‘তবে কথাটি ১০০ শতাংশ ভুলও নয়।’ মানুষের মানসিকতা কতটা কঠিন সেটা দেখানোর জন্য আমি পোস্টটি করেছিলাম। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষ হয়ত বদলাবে। মা ডিভোর্সি হলে তো বাবাও ডিভোর্সি। সেটা উল্লেখ করা হয় না। মেয়েদের সফট টার্গেট মনে করা হয়।” অভিনেত্রী আরো বলেন, ঐন্দ্রিলার সংযোজন, “২০২২ সালে দাঁড়িয়েও আমাদের এসব কথা শুনতে হয়। সিঙ্গল মাদারদেরও তো কত কথা শুনতে হয়। কঠিন কাজ করার পরেও তাঁদের নিয়ে সমালোচনা হয়। এই ফিউডাল মেন্টালিটি মানুষের বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই বেড়েছে। কখনও কখনও মনে হয় এঁদের বদলানো সম্ভব নয়।”
অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ার একটা অংশের সচেতন, বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর মানুষ সমর্থন করেছিলেন অভিনেত্রী ইন্দ্রিলা কে। রিঙ্কু নাথ নস্কর নামের একজন লেখেন, “ডিভোর্স হলেই যে খারাপ, সেই ভাবনাটাই বদলানোর প্রয়োজন। আর মেয়েরা যে মায়ের মতো হবে সেটাই স্বাভাবিক। বাকিটা নির্ভর করে দৃষ্টিভঙ্গির উপর।” শারমিন নিশি লেখেন, “ডিভোর্স মানে খারাপ না। বরং শ্রদ্ধা জানিয়ে সরে আসা এবং আত্মসম্মান বাঁচানো।” প্রসঙ্গত “বোধন” ওয়েব সিরিজে দুটি নির্যাতিতা নারীর জীবন সংগ্রাম ফুটিয়ে তুলেছেন নির্মাতারা। ওয়েব সিরিজটি নিজের কনটেন্টের জন্য বেশ ভাল রকম প্রশংসিত হয়েছে। সমাজের নিম্ন মানসিকতার বিরুদ্ধে দৃঢ়চেতা নারীর সংগ্রাম ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সমগ্র সিরিজটিতে।
Comments are closed.