অন্ধ্র-বিহার-ছত্তিসগঢ়ে মাওবাদী দমনের অভিজ্ঞতা দিয়ে কাশ্মীরে উগ্রপন্থী মোকাবিলা করবেন চারু সিনহা। ১৯৯৬ ব্যাচের তেলেঙ্গানা ক্যাডার চারু সিনহাকে শ্রীনগর সেক্টরে সিআরপিএফের ইন্সপেক্টর জেনারেল (IG) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
১৯৯৬ ব্যাচের তেলেঙ্গানা ক্যাডার চারু সিনহার শুরুটা অন্ধ্রপ্রদেশে। সেখানে কুড্ডাপ্পা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুপার হিসেবে প্রথম মাওবাদী দমনের কাজে নামেন। তারপর থেকে কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময়ই মাওবাদীদের মোকাবিলা করতে হয়েছে তাঁকে। ২০১৮ সালে তাঁকে সিআরপিএফে নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সিআরপিএফের বিহার সেক্টরের আইজি হিসেবে কাজ শুরু করেন চারু সিনহা। সেখানেও সরাসরি মোকাবিলা মাওবাদীদের সঙ্গে। সেখান থেকে তাঁকে সিআরপিএফের জম্মু সেক্টরের আইজি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এতদিন সেই পদেই কাজ করছিলেন হায়দরাবাদ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রী। বিহারে থাকাকালীন তাঁর মুকুটে জুড়েছে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে একাধিক সফল অপারেশনের পালক। একইভাবে জম্মুতেও তাঁর একাধিক জঙ্গি বিরোধী অভিযানে সাফল্যের কথা শোনা যায়। এবার উপত্যকার সবচেয়ে কঠিন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে।
সিআরপিএফের শ্রীনগর সেক্টরের আওতায় আসে জম্মু-কাশ্মীরের বডগাঁও, গান্দেরবাল, শ্রীনগর। এছাড়াও রয়েছে কেন্দ্রশাসিত লাদাখ। শ্রীনগরের প্রশাসনিক ভারও রয়েছে এই সেক্টরের উপরই। স্বভাবতই উপত্যকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকা। এখানে সিআরপিএফ পুলিশ ও সেনার সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে জঙ্গি দমনের কাজ চালায়। প্রায় রোজ একাধিক অপারেশন চালায় বাহিনী। এবার থেকে সব সামলানোর দায়িত্ব চারু সিনহার উপর।
হায়দরাবাদের সেন্ট ফ্রান্সিস কলেজ থেকে ইংরেজি, ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার পর চারু সিনহা হায়দরাবাদ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে। তিনি ফোর্থ ক্লাস অফ কমলনয়ন বাজাজ এবং অ্যাসপেন গ্লোবাল লিডারশিপ নেটওয়ার্কের ফেলো।
অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের হয়ে কর্মজীবনের একেবারে শুরুর দিকে, মেহবুবনগরের পুলিশ সুপার থাকাকালীন চেঞ্চু উপজাতি এবং এলাকার মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের মধ্যে তাঁর কাজ এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে এনেছিল। পুনর্বাসন প্যাকেজের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিসিংয়ের মাধ্যমে বিদ্রোহী দালাম সম্প্রদায়কে অস্ত্র ত্যাগে বাধ্য করেছিলেন। এক বিন্দুও রক্ত না ঝরিয়ে সন্ত্রাসবাদের শিকড় উপড়ে ফেলেছিলেন এই তরুণী আইপিএস অফিসার। এবার সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ।
Comments are closed.