কোভিড ১৯ পরিস্থিতিতে ৭০ শতাংশেরও বেশি ছেলে মেয়ের পড়ায় ব্যাঘাত, রিপোর্ট দিল ILO

করোনাভাইসের ভয়ঙ্কর প্রভাব শিক্ষাক্ষেত্রে। অতিমারির জেরে বিশ্বের ৭০ শতাংশ স্কুল-কলেজের পড়ুয়া ও নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া যুব সম্প্রদায়ের শিক্ষা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, জানাল আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO)।‘Youth and COVID-19: impacts on jobs, education, rights and mental well-being’ শীর্ষক রিপোর্টে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা জানাচ্ছে, প্যান্ডেমিকের ফলে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার মাধ্যম যেভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, তাতে সমস্যায় পড়েছেন সিংহভাগ পড়ুয়া।

৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ও যুব সম্প্রদায় জানিয়েছে ক্লাসরুম থেকে অনলাইন ক্লাস এবং দূরশিক্ষা ব্যবস্থার ফলে তাঁদের শিক্ষায় খামতি থেকে যাচ্ছে। শেখার সবরকম চেষ্টা সত্ত্বেও ৫০ শতাংশ পড়ুয়া মনে করছে তাঁরা পিছিয়ে পড়ছে। ৯ শতাংশ পড়ুয়ার আশঙ্কা তাঁরা অবধারিতভাবে পরীক্ষায় ফেল করবে।

রিপোর্ট বলছে, কম আয়ের দেশগুলিতে পরিস্থিত আরও খারাপ। সেখানে অনলাইন ক্লাসের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবার সুবিধা পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। ইন্টারনেট ব্যবহার করার সামর্থ নেই অনেকের, কারও বাড়িতে আবার জায়গার অভাব।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ‘ডিজিট্যাল ডিভাইডস’ এর দিকে নজর ঘুরিয়েছে। যেখানে বেশি আয়ের দেশগুলির ৬৫ শতাংশ পড়ুয়া অনলাইনে ক্লাস করছেন, কম আয়ের দেশগুলিতে এই সংখ্যাটা মাত্র ১৮ শতাংশ। রিপোর্টে বলা হচ্ছে, করোনা অতিমারি সারা পৃথিবীর যুব সম্প্রদায়কে নাড়িয়ে দিয়েছে। চাকরি ও কর্মক্ষেত্র তো বটেই শিক্ষার ক্ষেত্রেও বিশাল প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা। আইএলও এর জেনারেল ডিরেক্টর গাই রাইডার বলছেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যা হতে দেওয়া যায় না।

 

কেরিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তায় যুব সম্প্রদায় 

আইএলও রিপোর্ট জানাচ্ছে, ৩৮ শতাংশ যুব সম্প্রদায় তাঁদের কেরিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। অতিমারির জেরে প্রতি ৬ জনের মধ্যে একজন যুবকের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

সেলসের মতো পেশায় যুক্ত যুবক-যুবতীরা ব্যাপক অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করা ৪২ শতাংশ যুবক-যুবতীর বেতন কিংবা রোজগার কমে গিয়েছে। যা তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যকেও বিঘ্নিত করছে। আইএলও এর সমীক্ষা বলছে ৫০ শতাংশ তরুণ-তরুণীর উদ্বেগ বা হতাশার শিকার হওয়ার আশঙ্কার কথা। ১৭ শতাংশ সম্ভবত ইতিমধ্যেই উদ্বেগ ও ডিপ্রেশনে ভুগছেন।

 

যুব সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়ান 

আইএলও তাদের রিপোর্টে অতিমারি পরিস্থিতিতে যুব সম্প্রদায়ের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বাড়তি নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

এই প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও বহু যুবক-যুবতী লড়াই করে যাচ্ছেন, অতিমারি পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই অতিমারিতে প্রতি চারজন যুবক- যুবতীর মধ্যে একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন। যুব সম্প্রদায়কে আরও বেশি কাজের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে রিপোর্টে। বলা হচ্ছে, চাহিদা বুঝে, তাদের আইডিয়া নিয়ে নতুন নীতি নির্ধারণে জোর দেওয়া হোক।

Comments are closed.