বিশ্বজুড়ে ছড়াচ্ছে করোনা আতঙ্ক। চিনের পর করোনায় মৃতের সংখ্যার নিরিখে এগিয়ে রয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। ১১ মার্চের হিসেব অনুযায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইতালিতে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১,২৬৬ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৭ হাজার। চিনের পাশাপাশি ইতালি সহ ইউরোপের একটি বড় অংশই আক্রান্ত হয়েছে করোনার ছোবলে। তাই আলাদা করে ইউরোপ নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’।
ইতালিতে মৃতদের মধ্যে সিংহভাগই বয়স্ক। সম্প্রতি ইতালির একটি নামি সংবাদপত্রে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে মৃতদের মধ্যে ৮২৭ জনই বয়স্ক। যাঁদের গড় বয়স ৮১ বছর। অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে তাঁরা আগে থেকেই ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন।
আরও জানতে ক্লিক করুন, ইউএস আর্মি কি চিনে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল?
প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইতালিতে এখনও পর্যন্ত যতজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে ১৪.১ শতাংশ মানুষের বয়স ছিল ৯০ বছরের উপরে। ৪২.২ শতাংশের বয়স ৮০-৯০ বছরের মধ্যে। ৩২.৪ শতাংশ মৃতের বয়স ৭০-৭৯ বছরের মধ্যে। ৮.৪ শতাংশ মৃত ব্যক্তির বয়স ৬০-৬৯ বছরের মধ্যে। প্রায় ২.৮ শতাংশ মানুষের বয়স ৫০-৫৯ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে ইতালিতে মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই বয়স্ক। তাঁদের বেশিরভাগেরই বয়স ছিল ৬৫ বছরের উর্ধ্বে এবং অনেকেরই গুরুতর রোগে ভোগার অতীত ইতিহাস আছে। পাশাপাশি আরও জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে ৮০ শতাংশই পুরুষ।
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা ভাইরাস মূলত আঘাত হানছে ফুসফুস, কিডনি, রেসপিরেটরি সিস্টেমে। কমিয়ে দিচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ফলে বয়স্করাই মূলত এই মারণ ভাইরাসে বেশি মারা যাচ্ছেন। আর যাঁদের গুরুতর অসুস্থতা বা শারীরিক সমস্যার ইতিহাস রয়েছে তাঁরা সহজেই কাবু হয়ে যাচ্ছেন এই মারণ ভাইরাসে।
কিন্তু মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মৃত্যু হারের ফারাক এত বেশি কেন? চিকিৎসকরা বলছেন, শারীরবৃত্তীয় ও জিনগত কারণেই পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি পাওয়ার বেশি। তাঁরা এমনিতেই জ্বর, সর্দি, কাশিতে তুলনামূলকভাবে কম ভোগেন। তাই এটা হতেই পারে তুলনায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় পুরুষরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন করোনাতে।
Comments are closed.