হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক নিউজের রমরমার যুগে সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম তৈরি করেছে ফ্যাক্ট চেক প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে খবরের সত্যতা যাচাই করা হয়। এবার এই ফ্যাক্ট চেক প্রক্রিয়া ঢুকে পড়ল সরাসরি রাজনীতির ময়দানেও। ২০১৪ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বলা বিভিন্ন বক্তব্যকে তুলে ধরে তার সত্যতা যাচাই শুরু করল তৃণমূল। প্রক্রিয়াটির নাম দেওয়া হয়েছে জুমলা মিটার। এই মিটার প্রকাশ করা হচ্ছে তৃণমূলের অফিশিয়াল ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট @AITCofficial-এ।
তৃণমূল নেত্রী আগেই বলেছিলেন, লড়াই এবার বিজেপির বিরুদ্ধে। এই প্রেক্ষিতে নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপিকে আক্রমণ করে কখনও #প্রধানমন্ত্রীহিসেবদাও ক্যাম্পেন, আবার কখনও মোদীর প্রতিশ্রুতির বাস্তব চিত্র তুলে ধরে মিউজিক ভিডিও, বিভিন্নভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাতার প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল। সেই তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন, জুমলা মিটার।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর থেকে মোদী বহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দিয়েছেন সফলভাবে হাজারো কাজ সম্পাদনের খতিয়ানও। কিন্তু মোদীর বলা কথার সঙ্গে কি আদৌ সামঞ্জস্যপূর্ণ বাস্তব? মোদীর বক্তব্য এবং বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক, এমনটাই দাবি তৃণমূলের। জুমলা মিটারের সাহায্যে সেই ফারাকই তুলে ধরা হচ্ছে মানুষের কাছে, জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী যখন যা বলবেন, সঙ্গে সঙ্গে তার সত্যতা যাচাই করে প্রকাশ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, দেশের উন্নয়ন রাজ্যগুলির মাধ্যমে চালিত হবে। এই প্রসঙ্গে কী বলছে তৃণমূলের জুমলা মিটার?
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কৃষিক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণাও মিথ্যে বলে দাবি তৃণমূলের। কী বলছে জুমলা মিটার?
নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, বিদেশে রাখা কালো টাকা ফিরিয়ে আনতে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। তৃণমূলের জুমলা মিটার বলছে, সরকার গঠনের পর টাস্ক ফোর্স গঠন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিদেশ থেকে কালো টাকা ফেরানোর কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী মোদী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন উত্তরবঙ্গের জন্য কিছুই করেননি। কিন্তু তৃণমূলের জুমলা মিটার প্রধানমন্ত্রীর সেই দাবিতেও মিথ্যে খুঁজে পেয়েছে। ভারতীয় রেলওয়েকে উদ্ধৃত করে জুমলা মিটার দেখাচ্ছে, মোদী সত্যি বলেননি।
ক’দিন আগেই ভোট প্রচারে রাজ্যে এসে নকশালবাড়ি থেকে মোদী অভিযোগ করেছিলেন, দিদি বাংলার স্পিড ব্রেকার, উন্নয়নে বাধা দিচ্ছেন। দ্য ইকনমিক টাইমসকে উদ্ধৃত করে তৃণমূলের জুমলা মিটার দেখাচ্ছে এক্ষেত্রেও সত্যি বলেননি মোদী। কী বলছে জুমলা মিটার?
এভাবে মোদীর একের পর এক দাবি তুলে ধরে তার সত্যতা যাচাই করে নিজেদের অফিশিয়াল ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করতে শুরু করেছে তৃণমূল। সব মিলিয়ে মোদী-মমতার রাজনৈতিক যুদ্ধে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবারের নির্বাচনে সোশ্যাল মিডিয়ার বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহার।
Comments are closed.