রাজ্যে ভোট পরবর্তী অশান্তির মামলায় সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানোর নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। বৃহস্পতিবার এই মামলার রায় দেয় পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তম ডিভিশন বেঞ্চ।
খুন, অস্বভাবিক মৃত্যু, ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের তদন্ত করবে সিবিআই এবং অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলার তদন্ত করবে সিট। সিটের নেতৃত্ব দেবেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের।
অন্যদিকে জাতীয় মানবধিকার কমিশনের রিপোর্টে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সহ রাজ্যের একাধিক হেভিয়েট তৃণমূল নেতা মন্ত্রীকে কুখ্যাত দুষ্কৃতী বলে আখ্যা দেওয়া হয়। কমিশনের রিপোর্টের প্রতিবাদ করে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকরা আদালতে আবেদন করে জানান তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ না করেই NHRC এই রিপোর্ট তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছে। তাঁদের নামে কোনও থানায় অভিযোগ নেই। আদালত তাঁদের মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদন খারিজ করেছে।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল সহ পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তম ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ৬ সপ্তাহের মধ্যে সিবিআই এবং সিটকে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এই মামলায় আরও একটি নতুন ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করা হবে। কারোর কোনও অভিযোগ থাকলে সেখানে জানানো যাবে। ক্ষতিগ্রস্তদের অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ রাজ্য সরকারকে।
রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে হাইকোর্টে একগুচ্ছ মামলা দায়ের হয়। এই মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দলকে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেয় আদালত। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জমা দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে শুনানি শুরু হয়। গত ৩ আগস্ট শেষ হয় এই মামলার শুনানি। রায়দান স্থগিত ছিল। বৃহস্পতিবার এই মামলার রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্টে।
উল্লেখ্য ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় ১৩ জুলাই আদালতে একটি দীর্ঘ রিপোর্ট জমা দেয় NHRC। কমিশন রিপোর্টে রাজ্য সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, রাজ্যে আইনের শাসন নেই, শাসকের আইন আছে। হিংসার ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ছিলো বলেও অভিযোগ করা হয়। সেই সঙ্গে রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়, ভোটের ফল প্রকাশের পর রাজ্যে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে তার তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হোক। অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর ঘটনার জন্য সিট গঠন করে তদন্তের সুপারিশও করা হয়।
যদিও NHRC এর এই রিপোর্টকে পক্ষপাতদুষ্ট এবং অতিরঞ্জিত বলে আখ্যা দেয় তৃণমূল। NHRC-এর প্রতিনিধি দলের সদস্যদের নাম উল্লেখ্য করে বিজেপি যোগের অভিযোগ তোলে শাসক শিবির।
Comments are closed.