রবিবার সকালে নন্দাদেবী হিমবাহ ফেটে হুড়মুড়িয়ে নেমে এসেছিলো নীচের দিকে। উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ, তপোবন সংলগ্ন কয়েকটি গ্রাম নিশ্চিহ্ন। রেনি সহ কয়েকটি গ্রামের একমাত্র যোগাযোগের পথ রেনি সেতু ধংস্ব। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের, ১৫০ জন শ্রমিক নিখোঁজ।
মেঘ ভেঙে বৃষ্টি এবং তা থেকে হিমবাহে ফাটল, এসব কিছুর পেছনেই বিশেষজ্ঞরা দায়ী করছেন গ্লোবাল ওয়ার্মিংকে। ফেব্র্রুয়ারিতে ঠান্ডায় যেখানে হিমবাহ জমে থাকার কথা তার জায়গায় এই ফাটল চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে পরিবেশবিদদের কপালে। এই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠছে, অসময়ে এমন মেঘভাঙা বৃষ্টি কি কলকাতাতেও হতে পারে? বিশ্ব উষ্ণায়নের চোখরাঙানি থেকে আদৌ কি সুরক্ষিত আমাদের তিলত্তমা? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওসনোগ্রাফির অধ্যাপক সুগত হাজরার মতে মেঘভাঙা বৃষ্টি এখন আর স্রেফ শোনা কথা নয়, কেউ ভাবতে পেরেছিলো শীতে এভাবে হিমবাহের একটা অংশ ভেঙে পড়বে? বর্ষকালে এমনটা হয়। অধ্যাপক হাজরার চাঞ্চল্যকর দাবি, কলকাতার মানুষও এমনটা চাক্ষুষ করতে পারেন। সমতল হওয়ায় এখানে প্রাণহানি না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি কিন্তু জলের তলায় চলে যেতে পারে শহরের একাধিক এলাকা।
[আরও পড়ুন- হিমবাহ ভেঙে বিরাট তুষারধস নামল জোশীমঠে, নিখোঁজ ১৫০]
পরিসংখ্যান বলছে শহরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে। মেঘভাঙ্গা বৃষ্টির ক্ষেত্রে একঘন্টায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়। সুগত বাবু জানিয়েছেন গভীর পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ৭০ বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতের পশ্চিম উপকূল, মধ্য ভারতে অতি প্রবল বৃষ্টির পরিমান প্রায় তিন গুণ বেড়ে গেছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলেই এমনটা ঘটছে বলে তিনি জানিয়েছেন। আরব সাগরের উষ্ণতা মাত্রাতিরিক্ত বাড়ায় চিন্তার ভাঁজ মুম্বাইয়ের কপালেও।
গত বছরই আমফানের ধ্বংস লীলার সাক্ষী থেকেছে শহর তথা রাজ্য। সমীক্ষা বলছে গত ১০ বছরে ৮% শক্তি বাড়িয়েছে ঘূর্ণি ঝড়। অধ্যাপক সুগত হাজরার মতে, কড়া হাতে বিশ্ব উষ্ণায়নকে ঠেকাতে না পারলে অচিরেই মেঘভাঙ্গা বৃষ্টির সাক্ষী হতে পারে কলকাতা। সেক্ষেত্রে শহরের বিস্তীর্ণ অংশ চিরকালের জন্য চলে যেতে পারে জলের তলায়।
Comments are closed.