তৃণমূল থেকে বিজেপি বা গেরুয়া থেকে তৃণমূল, দলবদল চলছে। তৃণমূল-বিজেপি একই মুদ্রার দুই পিঠ, বঙ্গের বামেরা বরাবর এই কথা বলে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে বাম ছেড়ে রামে যোগ দেওয়ার চল আলিমুদ্দিনের দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ।
নবান্নে বিমান বসুদের ফিশফ্রাই খাওয়ানোর মাঝেই মমতা ব্যানার্জি বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনাদের ভোট বিজেপিতে যাচ্ছে কেন? লোকসভা ভোটের পর মমতার সেই অনুযোগ পোক্ত ভিত্তি পায়। দেখা যায় বামেদের ভোট সরাসরি গেরুয়া বাক্সে ঢুকেছে, মমতার ভোট অটুট।
এই প্রেক্ষিতে কেবল বাম ভোট না, বাম নেতাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ঘটনাও দেখছে রাজ্যবাসী। লোকসভা ভোটের আগে মালদার খগেন মুর্মু সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। সেই ট্র্যাডিশন কিন্তু বজায় রয়েছে এখনও।
গত শনিবার মেদিনীপুর কলেজের মাঠে শুভেন্দু অধিকারীকে বিজেপিতে গ্রহণ করেন অমিত শাহ। সেদিন হলদিয়ার সিপিএম বিধায়ক তাপসী মণ্ডল, তমলুকের সিপিআই বিধায়ক অশোক দিন্দাও বিজেপিতে যোগ দেন। পাশাপাশি ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূল ঘুরে বিজেপিতে গেলেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল। গত বিধানসভা ভোটে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে মালদার গাজল থেকে জেতেন দীপালি বিশ্বাস। সেই বছরই শুভেন্দুর হাত ধরে তৃণমূলে যান। ২০২১ বিধানসভা ভোটের আগে তিনি তৃণমূল ছেড়ে শুভেন্দুর সঙ্গে গেলেন বিজেপিতে।
উত্তরের আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ দশরথ তিরকেও একইদিনে বিজেপিতে যোগ দেন। তিনিও শুরুতে বাম শিবিরে ছিলেন। তারপর তৃণমূল ঘুরে বিজেপি। ক’দিন আগেই সিপিএমের লড়াকু নেত্রী কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলার রিঙ্কু নস্কর বিজেপিতে যোগদান করেন।
সবমিলিয়ে বাম শিবির ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের প্রবণতা নিয়ে তৃণমূলকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছোঁড়ার মতো জায়গায় চলে এসেছে সিপিএম।
বাম শিবিরের সবচেয়ে বড়ো চিন্তা এবার কে? আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর বেশ কয়েকজন নেতার গতিবিধি সন্দেহজনক ঠেকেছে নেতৃত্বের। তাঁদের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা হচ্ছে। একইভাবে আরও কিছু নেতা সুযোগ বুঝে গেরুয়া শিবিরে ভিড়ে যেতে পারেন বলে মনে করছে আলিমুদ্দিন। সূত্রের খবর, সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা বাস্তব পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বুঝতে চাইছেন ঠিক কত জন বাম নেতা দলবদল করতে পারেন।
Comments are closed.