৪ মে, সোমবার থেকে গোটা দেশে আরও ২ সপ্তাহের জন্য লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্র। গ্রিন জোনে দোকানপাট খোলা, পরিবহণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেসব খোলা হলেও কোনও জায়গায়তেই পরিষেবা পুরো স্বাভাবিক থাকছে না। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের সিংহভাগ কর্মকাণ্ড বন্ধই থাকছে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত। দেখে নেওয়া যাক কোন জোনে কী কী বিধিনিষেধ থাকছে।
৩ টি জোনে ভাগ
দেশের ৭৩৩ জেলাকে এই লকডাউনের মেয়াদে ৩ টি জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন জোনে বিধিনিষেধও ভিন্ন। দেশে রেড জোন ১৩০ টি জেলা, ২৮৪ টি জেলা থাকছে অরেঞ্জ জোনে এবং ৩১৯ টি জেলা গ্রিন জোনে। এছাড়া রেড জোন ও অরেঞ্জ জোনের মধ্যবর্তী স্পর্শকাতর জায়গাগুলি কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে বিবেচিত হবে।
১৭ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে নিষেধাজ্ঞা
১) বিমান, রেল, মেট্রো রেল, আন্তঃরাজ্য সড়ক পথে যোগাযোগ বন্ধ থাকছে।
২) স্কুল, কলেজ, কোচিং ও ট্রেনিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
৩) হোটেল, রেস্তরাঁ আগের লকডাউনের মতোই বন্ধ থাকছে সব জোনে।
৪) সিনেমা হল, শপিং মল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স ইত্যাদি যেখানে বড় জমায়েত হয়, তা বন্ধ থাকবে।
৫) যে কোনও সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সভা ও অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৬) মন্দির, মসজিদ, গির্জা ইত্যাদি ধর্মীয় স্থান যেখানে ভক্ত ও দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে, তা বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে।
যে কোনও জোনে নতুন যে সব জিনিস নিষিদ্ধ
১) রেড, অরেঞ্জ কিংবা গ্রিন, যে জোনেই আপনি থাকুন না কেন, গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন ছাড়া সন্ধে ৭ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত রাস্তায় ঘোরাফেরা একেবারে নিষিদ্ধ।
২) ১০ বছরের নীচে এবং ৬৫ বছরের উর্ধ্বে যাঁদের বয়স, তাঁদের বাড়িতে থাকা বাধ্যতামূলক। এছাড়া কো-মর্বিডিটি থাকা এবং গর্ভবতী মহিলাদের বাড়ি থেকে বের হওয়া বারণ বলে কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
৩) পণ্যবাহী গাড়ি চলবে সব জোনেই।
জোন অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা
১) কনটেনমেন্ট জোনগুলিতে শুধুমাত্র নিত্য প্রয়োজনীয় এবং চিকিৎসা পরিষেবা খোলা থাকবে।
২) রেড জোনে সাইকেল রিকশ থেকে অটো, ট্যাক্সি, ক্যাব চলাচল বন্ধ। এক জেলা থেকে অন্য জেলা বাস চলাচলও হবে না রেড জোনে। সেলুন, স্পা বন্ধ থাকবে।
৩) অরেঞ্জ জোনের মধ্যে ট্যাক্সি ও ক্যাব চলাচলে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। তবে মাত্র একজন করে প্যাসেঞ্জার উঠবেন গাড়িতে। প্রাইভেট কারেও অনুমতি সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ যাতায়াত করবেন। এছাড়া ই-কমার্স সংস্থা, মদের দোকান খোলা রাখার অনুমতি থাকছে অরেঞ্জ জোনে।
৪) ২০ এপ্রিলের কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা জারি থাকছে সর্বত্র। যেমন আইটি সেক্টর, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উৎপাদন চালু থাকবে। তবে প্রাইভেট সেক্টরগুলিতে ৩৩ শতাংশ কর্মী অফিসে গিয়ে কাজ করবেন, বাকিদের ওয়ার্ক ফ্রম হোম জারি থাকবে।
৫) দেশব্যাপী যে কয়েকটি পরিষেবা বন্ধ থাকছে তা ছাড়া গ্রিন জোনের সব কিছু স্বাভাবিকভাবে চলবে। গ্রিন জোন থেকে গ্রিন জোনে বাস চলাচল শুরু হবে। তবে যাত্রী সংখ্যা থাকবে মোট আসনের ৫০ শতাংশ।
আচরণ বিধি
১) রাস্তায় বেরলে এবং কর্মক্ষেত্রে মুখে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
২) পাবলিক প্লেস এবং যানবাহনে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৩) ৫ জনের বেশি জমায়েত করা বারণ।
৪) পাবলিক এবং প্রাইভেট সেক্টরের সকল কর্মীর মোবাইল ফোনে আরোগ্য সেতু অ্যাপ থাকা বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্র।
Comments are closed.