আমপান, করোনা, বন্যা: প্রশাসনিক বৈঠকে আমলাদের নরমে-গরমে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর! উষ্মা প্রকাশ কয়েকজনের কাজে

কাজে গাফিলতি, মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন হুগলির জেলাশাসক। সবুজসাথী প্রকল্পের কাজ আটকে থাকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেন মমতা ব্যানার্জি। পাশাপাশি সোমবার নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে হওয়া প্রশাসনিক বৈঠকে উত্তর ২৪ পরগনায় করোনা সংক্রমণে লাগাম পরানো যাচ্ছে না কেন, তা নিয়েও আধিকারিকদের প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা পরীক্ষা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
আগামী কয়েকদিন রাজ্যে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এই প্রেক্ষিতে প্রশাসনিক বৈঠকে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্বে থাকা আমলা ও জনপ্রতিনিধিদের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আগাম সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি নরমে গরমে জানিয়ে দিলেন, করোনা মোকাবিলা করেই বন্যা নিয়ন্ত্রণ সহ বাকি সমস্ত ক্ষেত্রকে স্বাভাবিক রাখতে হবে।
এদিন করোনা মোকাবিলা নিয়েও জেলাগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিসংখ্যান দেখে জেলাগুলোকে বিভিন্ন নির্দেশ দেন মমতা। এরপরই মমতা ব্যানার্জি অভিযোগ করেন, কেউ কেউ রাজ্য কত মাস্ক কিনেছে তার হিসেব চাইছেন। তারপরেই পিএম কেয়ারস ফান্ডের নাম না করে বলেন, আপনাদের টেক কেয়ার ফান্ডে কত ঢুকছে তার হিসেব দেবেন তো? মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, আমাদের প্রশাসন অনেক স্বচ্ছ। প্রশাসনে কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হয় না বলে জানান তিনি। এই প্রসঙ্গেই বলেন, অনেক সময় আমার মন্ত্রীদের নামেও অভিযোগ পাই। নিজেই তখন ওই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে দেখে নিই অভিযোগ সত্যি কিনা। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যের প্রতিটি তহবিলে কত টাকা ঢুকছে এবং কীভাবে খরচ হচ্ছে তা প্রকাশ্যে আনা হয়। কিন্তু এখনও জানা যায়নি করোনা টেস্টের ত্রুটিপূর্ণ কিট কার নির্দেশে কেনা হয়েছিল।
শেষ কয়েকদিনে প্রতিদিনই বাংলার গড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। যার মধ্যেই একটা বড় অংশ উত্তর ২৪ পরগনার। সেই পরিসংখ্যানের নিরিখে এদিন উত্তর ২৪ পরগনার পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট জেলা ডেঙ্গুর আঁতুরঘর, এমন মন্তব্যও করেন তিনি।
করোনা পরিস্থিতিতে গত কয়েকমাস সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ ধীর গতিতে চলছে। সেগুলিতে আবার জোর দিতে নির্দেশ দেন মমতা। বলেন, স্কুল বন্ধ থাকলেও পড়ুয়ারা তাঁদের স্কলারশিপের টাকা যেন সময় মতো পান তা দেখতে হবে। সবুজ সাথী প্রকল্পের কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়েন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ঠিক মতো কাজ হচ্ছে না বলে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। স্কুল বন্ধ থাকলেও কোনওভাবেই সাইকেল বিলি বন্ধ রাখা যাবে না বলেও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সাইকেল বিতরণের কাজ শেষ করতে হবে। পাশাপাশি আগামী বছর রাজ্যেই সাইকেল কারখানা গড়ার কথা বলেন তিনি।

Comments are closed.