প্রতিদিন ভারত সহ বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অতিমারি করোনা এখনই শেষ হচ্ছে না। প্রতিষেধক তৈরি না হলে, ২০২১ সালের শীতকালে ভারতে দৈনিক ২.৮৭ লক্ষ মানুষ করোনায় সংক্রমিত হবেন। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বা MIT এর এক গবেষণায়।
এমআইটি-র অধ্যাপক হাজহির রহমানদাদ, জন স্টেরমান ও পিএইচডি গবেষক সে ইয়াং লিমের গবেষণা বলছে, তাড়াতাড়ি করোনার কোনও টিকা বা ওষুধ না বেরোলে, সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়বে ভারত। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে এখানে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা হবে প্রায় ৩ লক্ষ!
করোনা বিধ্বস্ত ৮৪ টি দেশের ৪.৭৫ বিলিয়ন মানুষের তথ্য নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন এমআইটি-র গবেষকরা। তাতে তারা জানাচ্ছেন, এই ৮৪ টি দেশে করোনা সংক্রমিত হবেন ২৪.৯ কোটি মানুষ, মারা যাবেন ১৭.৫ লক্ষ মানুষ। ভারত ছাড়াও প্রতিদিন সংক্রমিত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে যে দেশগুলিতে সেগুলি হল, আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, ব্রিটেন, নাইজেরিয়া, তুরস্ক, ফ্রান্স ও জার্মানি। গবেষকরা জানাচ্ছেন, আমেরিকায় আগামী শীতে দিনে ৯৫ হাজার ৪০০টি করোনা কেস হবে। এরপর সবচেয়ে বেশি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা (২০ হাজার ৬০০) ও ইরানে (১৭ হাজার)। গবেষকরা জানাচ্ছেন, টেস্টিংয়ের থেকেও কতটা সামাজিক দূরত্ব রাখা যায় তার ওপরেই নির্ভর করবে সংক্রমিতের সংখ্যা।
SEIR (Susceptible, Exposed, Infectious, Recovered) মডেল ব্যবহার করে এই সংখ্যাটি জানাচ্ছেন এমআইটির বিজ্ঞানীরা। এতে তিনটি ফ্যাক্টর ধরা হয়েছে। এগুলি হল বর্তমান টেস্টিং রেট ও রেসপন্স। যদি প্রতিদিন ০.১ শতাংশ করে টেস্টিং বাড়ে, তৃতীয়ত টেস্টিং যদি একই থাকে ও কন্টাক্ট রেট আট ধরা হয় (একজন সংক্রমিতের থেকে আটজন আক্রান্ত হতে পারে) তাহলে সংক্রমণ কোন জায়গায় যাবে তার একটা সমীক্ষা করেছেন তাঁরা।
বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন, হার্ড ইমিউনিটি অর্থাৎ, একটি অঞ্চলের মানুষের শরীরে করোনা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তৈরী হতে এখনও দেরি আছে। তবে এই সমীক্ষায় যে সংখ্যা বলা হয়েছে, সেটা বিভিন্ন ফ্যাক্টরের জন্য খানিক বদলে যেতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
ভারত এই মুহূর্তে করোনা সংক্রমণের সংখ্যায় বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। গত বুধবার পর্যন্ত দেশে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ৭.৪২ লক্ষ। সুস্থ হয়েছেন ৪.৫৬ লক্ষ মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ২০ হাজার ৬৪২ জনের।
Comments are closed.