সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া স্যাম পিত্রোদার সাক্ষাত্কারের পর কাটল না ২৪ ঘণ্টাও। একের পর এক ট্যুইটে কার্যত পিত্রোদাকে তুলোধোনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাদ গেলেন না রাহুল গান্ধীও।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে জাতীয় কংগ্রেসের বিদেশ শাখার চেয়ারম্যান তথা রাহুল গান্ধী ঘনিষ্ঠ স্যাম পিত্রোদা বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘ওঁরা বলছেন ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অত্যন্ত ভালো কথা। কিন্তু ৩০০ জনের মৃত্যু প্রমাণের জন্য ওঁরা কী কোনও তথ্য প্রমাণ প্রকাশ্যে আনছেন? দেশের মানুষের কি তা জানার অধিকার নেই?’ পিত্রোদার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই তাঁকে সরাসরি আক্রমণ শুরু করেন মোদী। একের পর এক ট্যুইটে মোদী বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ শানিয়ে অভিযোগ করেছেন, এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসলে দেশের সেনাবাহিনীকেই অপমান করা হচ্ছে।
মোদী ট্যুইটে লিখেছেন, ‘কংগ্রেস সভাপতির সবচেয়ে বিশ্বস্ত পরামর্শদাতা, কংগ্রেস পার্টির হয়ে পাকিস্তানের জাতীয় দিবস উদযাপন করছেন, অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণভাবে তা করা হচ্ছে ভারতের সেনাবাহিনীকে অপমানের মধ্যে দিয়ে। লজ্জা!’
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্যাম পিত্রোদা, বিভিন্ন বিদেশি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে প্রশ্ন তুলেছিলেন বালাকোট এয়ার স্ট্রাইকের সত্যতা নিয়ে। তিনি বলেছিলেন, আমি আরও একটু বেশি জানতে চাই কারণ নিউইয়র্ক টাইমস সহ অন্যান্য সংবাদপত্রের প্রতিবেদন পড়েছি। আমরা কি সত্যিই হামলা করেছিলাম? আমরা কি সত্যিই ৩০০ জঙ্গিকে মারতে সক্ষম হয়েছি? আমার কাছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। একজন নাগরিক হিসেবে, এটা জানা আমার অধিকারের মধ্যে পড়ে। আমার কাজই হল প্রশ্ন করা। এর অর্থ আমি জাতীয়তাবাদী নই, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। আমাদের সত্যিটা জানতে হবে। ভারতের প্রত্যেকটি নাগরিকের এই সম্পর্কিত তথ্য জানার অধিকার আছে। বিশেষ করে, যখন বিদেশী সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদনের মাধ্যমে উল্লেখ করছে, যে একজনেরও মৃত্যু হয়নি। ভারতের নাগরিক হিসেবে তা শুনতে আমার খারাপ লাগে, বলেছিলেন পিত্রোদা।
পিত্রোদার অবস্থানই কংগ্রেসেরও অবস্থান কিনা প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। কংগ্রেসের বিদেশ শাখার চেয়ারম্যান স্যাম পিত্রোদা সরাসরি জানিয়েছিলেন, এই মতামত তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত। দল নয়, একজন ভারতবাসী হিসেবেই তিনি এই প্রশ্ন তুলছেন বলেও জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি, ২৬/১১ মুম্বই হামলার উদাহরণ তুলে ধরে স্যাম পিত্রোদা বলেন, কয়েকজন লোক এসে মুম্বইয়ের তাজ ও ওবরয় হোটেলে হামলা চালানো, তার পাল্টা হিসেবে ভারতের কি পাকিস্তানকে আক্রমণ করা উচিত? ভারত আক্রমণ করলেও, মুম্বই হামলার ক্ষত কি তাতে মিটবে? পিত্রোদার মতে, এভাবে সমাধান থেকেই কেবল আরও দূরে সরে যেতে থাকব আমরা।
কিন্তু স্যাম পিত্রোদার এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে কংগ্রেসকে আক্রমণে কসুর করছেন না মোদী। একের পর এক ট্যুইটে, তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস সেনাবাহিনীর উপরই প্রশ্ন তুলছে। মোদী বলেন, বিরোধীরা বারবার আমাদের সেনাবাহিনীকে অপমান করে চলেছে। আমি সমস্ত ভারতবাসীর কাছে আবেদন করছি, বিরোধী নেতাদের প্রশ্ন করুন। তাদেরকে সাফ জানিয়ে দিন, ১৩০ কোটি ভারতবাসী আপনাদের কোনওদিন ক্ষমা করবে না।
Comments are closed.