করোনাভাইরাস রুখতে দু’দফার লকডাউনের জেরে থমকে গিয়েছে দেশের অর্থনীতি। লকডাউনের পর কী হবে, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কোনও রূপরেখা দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। এই অবস্থায় শ্রমিক দিবসের আগের দিন ভবিষ্যতের দিশা নির্দেশ দিলেন ইনফোসিসের সহ প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তি। ইটি নাউ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নারায়ণমূর্তি অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানোর দাওয়াই হিসেবে দেশজুড়ে কর্মীদের সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টা অফিস করার কথা বলেছেন।
অন্যান্য বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার মাঝে ইনফোসিসের সহ প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, মারণ ভাইরাস নিয়ে তাঁর নিজস্ব মতামতও। তিনি বলছেন, একটা বিষয় পরিষ্কার, আগামী ১২ থেকে ১৮ মাস আমাদের করোনাভাইরাস নিয়েই ঘর করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে সংস্থাগুলোকে জরুরি নজর দিতে হবে কর্মীদের সামগ্রিক সুরক্ষা ব্যবস্থার দিকে। যাতে সংক্রমণ ছড়ানোর পথ রুদ্ধ করা যেতে পারে।
কর্মীদের সুরক্ষার দিকে নজর দিক সংস্থাগুলো
নারায়ণমূর্তি বলছেন, কখন কোনও সংস্থা বা কারখানা খোলা হবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে একমাত্র ভরসা রাখতে হবে ডেটা বা তথ্যের উপর। কারও ব্যক্তিগত ইচ্ছে অনিচ্ছের উপর নয়। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করেই আমরা সহজেই জানতে পারছি, ভাইরাসের প্রকোপে সবচেয়ে বিপদগ্রস্থ কারা? উত্তরটা হল, বয়স্করা। নারায়ণমূর্তি বলছেন, আমাদের বয়সের মানুষকে পুরোপুরি বাদ রেখে অপারেশনাল দিকে যেতে হবে। আর যাঁরা আমাদের চেয়ে কম বয়সী তাঁদের সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত গাউন, মাস্ক, গ্লাভস, চশমার যোগান দিতে হবে সংস্থাগুলোকেই, বলছেন ইনফোসিসের সহ প্রতিষ্ঠাতা।
আর সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের জন্য নারায়ণমূর্তি বলছেন, যে অফিসে দুটো করে শিফট, তারা তিনটে শিফট চালু করুক। এতে অফিসে এক সময়ে কম কর্মী থাকবেন। দূরত্ব বজায় রাখা সহজ হবে।
অর্থাৎ, কম বয়সীরা প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যাবস্থা নিয়ে কাজে ফিরুন আর বয়স্করা বাড়ি থেকে কাজ করুন। চুম্বকে এই হল ভারতের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের অন্যতম প্রাণ পুরুষ এন আর নারায়ণমূর্তির বিশ্লেষণ।
অফিসে কাজের সময় বাড়ানো
নারায়ণমূর্তি বলছেন, অর্থনীতি একদম থমকে গিয়েছে। চালু করতে গেলে বিপুল শ্রম দিতে হবে। তা সম্ভব একমাত্র কাজের সময় এবং কাজ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার মধ্যে দিয়ে। তাই নারায়ণমূর্তির প্রস্তাব, প্রতিদিন অন্তত ১০ ঘণ্টা অফিসে কাজ করতে হবে, সপ্তাহে ৬ দিন। আর এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে অন্তত ২-৩ বছর। পাশাপাশি কেন্দ্রকে নারায়ণমূর্তির প্রস্তাব, একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি তৈরি করুন। তাতে থাকুন দেশের এই ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা। যাঁদের সামগ্রিক পরামর্শে মন্দা কাটানোর পথ পাবে অর্থনীতি।
Comments are closed.