করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত বিশ্ব। এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত সোয়া ২ কোটিরও বেশি মানুষ। মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৩ হাজার। এর মধ্যেই চিন্তা বাড়িয়েছে মালয়েশিয়া থেকে পাওয়া একটি খবর। যা এ যাবৎ ভ্যাকসিন গবেষণাকে বড়সড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় করোনাভাইরাসের নতুন একটি স্ট্রেইনের খোঁজ পাওয়া গেছে। এই বিশেষ স্ট্রেইন যুক্ত করোনাভাইরাস সাধারণ করোনাভাইরাসের তুলনায় ১০ গুণ বেশি সংক্রামক বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। ইউরোপে এই স্ট্রেইনকে বলা হয়েছে D614G। যা মালয়েশিয়ার ৪৫ জন করোনা সংক্রমিতের মধ্যে অন্তত তিনজনের শরীরে পাওয়া গিয়েছে। গবেষকরা মনে করছেন, সম্ভবত এই সংক্রমণ ছড়িয়েছিল ভারত থেকে ফেরা এক রেস্তোরাঁ মালিকের কাছ থেকে। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকার নিয়ম ভাঙায় ওই ব্যক্তিকে পাঁচ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছিল মালয়েশিয়ার আদালত। আবার ফিলিপিন্স থেকে ফেরা কিছু মানুষের মধ্যেও ‘নতুন’ করোনাভাইরাসের স্ট্রেইনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে খবর।
মালয়েশিয়ার ডিরেক্টর জেনারেল অফ হেলথ নুর হিশাম আবদুল্লাহ সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, করোনার নতুন স্ট্রেইন যুক্ত ভাইরাসের খোঁজ মেলার অর্থ হল এতদিন পর্যন্ত ভ্যাকসিন বা ওষুধ নিয়ে যা যা গবেষণা হয়েছে, তা ফের নতুন করে শুরু করতে হবে। কারণ নতুন করোনাভাইরাসের স্ট্রেইন কোভিড-১৯ এর চেয়ে ১০ গুণ বেশি সংক্রামক বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেক্ষেত্রে দরকার আরও বেশি সতর্কতা।
নুর হিশাম মালয়েশিয়ার মানুষের জন্য রবিবার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন নতুন প্রজাতির ভাইরাস যাতে বেশি ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সবাইকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। মানতে হবে সুরক্ষাবিধি।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ইউরোপ ও আমেরিকায় করোনাভাইরাসের এত ব্যাপক প্রভাবের অন্যতম কারণ হল ভাইরাসের বিবর্তন। তার ফলে বারবার গবেষণায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে। যে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ চলছে, দেখা যাচ্ছে সেই ভ্যাকসিন এই নতুন ধরনের প্রজাতির ক্ষেত্রে কার্যকর নয়। সেক্ষেত্রে ফের নতুন করে গবেষণা করতে হচ্ছে।
এতদিন পর্যন্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় মালয়েশিয়া করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনেক এগিয়ে ছিল। তবে সম্প্রতি সেখানেও সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। গত শনিবার নতুন করে ২৬ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন, যা ২৮ জুলাইয়ের পর সর্বাধিক। রবিবার আরও ২৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। আর এই নতুন সংক্রমিতদের মধ্যে অনেকের শরীরেই বিবর্তিত ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। যা রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে তাবড় বিজ্ঞানী ও ডাক্তারদের।
Comments are closed.