কর্মীদের চাকরি ছাড়ার নিয়ম শিথিল করল কগনিজেন্ট! এ কি আরও ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত?

ভারত তথা বিশ্বের অর্থনীতি মন্দা আক্রান্ত। তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এসে পড়েছে সেই মন্দার আঁচ, চলছে ছাঁটাই। এই অবস্থায় তাৎপর্যপূর্ণ খবর এল কর্পোরেট জায়ান্ট কগনিজেন্টের তরফে। কৌশলগত পুনর্গঠনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ধাপে ধাপে ৭ হাজারেরও বেশি কর্মী ছাঁটাই করা হবে বলে জানানোর পর এবার সংস্থার বেঞ্চে থাকা কর্মীদের চাকরি ছাড়ার নিয়ম শিথিল করল তারা। এই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি কর্মীদের একাংশকে ঘুরিয়ে দরজা দেখানোর নীতি নিল কগনিজেন্ট?

সম্প্রতি সংশোধিত বেঞ্চ পলিসি প্রকাশ করেছে কগনিজেন্ট। তাতে বলা হয়েছে, বেঞ্চে থাকা কর্মীরা যদি প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে মাত্র ৩৫ দিনের নোটিস দিলেই চলবে। আগে এক্ষেত্রে ২ মাস বা ৬০ দিনের নোটিস দেওয়ার নিয়ম ছিল। আবার বেঞ্চে ৩৫ দিন কাটালেই যে কোনও কর্মীকে কাজ ছাড়ার কথা বলতে আটকাবে না সংস্থার। এর আগে এক্ষেত্রে সাধারণত দুই থেকে তিনমাসের সময় দেওয়াই দস্তুর ছিল।

বেঞ্চ কী?

আইটি সেক্টরে সাধারণভাবে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকা কর্মীদের বলা হয় তাঁরা বেঞ্চে আছেন। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট প্রোজেক্টে তাঁদের অন্তর্ভুক্তি হয়নি। কোন প্রোজেক্টে কতজনকে নেওয়া হবে, কারা বেঞ্চে থাকবেন, তা স্থির করে রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ বা আরএমজি। কোনও কর্মী কোন প্রোজেক্টে কাজ করতে আগ্রহী, তা জেনে বিভিন্ন প্রোজেক্টে কর্মী সরবরাহ করে তারা। কোনও কর্মী কোনও নির্দিষ্ট প্রোজেক্টে কাজ না করতে চাইলে, তাঁকে অন্য প্রোজেক্টে অন্তর্ভুক্ত করে আরএমজি। কর্মীদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের দিকেও খেয়াল রাখে আরএমজি।

এর আগে বেঞ্চে থাকা কর্মীরা সংস্থারই অন্য কোনও প্রোজেক্ট কিংবা অন্য কোথাও কাজ খোঁজার ব্যাপারে বেশি সময় পেতেন। কিন্তু পরিবর্তিত নিয়মে কগনিজেন্ট সেই পদ্ধতির বদল ঘটাচ্ছে। এবার থেকে ৬০ দিনের পরিবর্তে কেবলমাত্র ৩৫ দিন সময় পাবেন কর্মীরা। সেই সময় পেরিয়ে গেলে কর্মী কিংবা সংস্থা, যে কেউ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

আপাতদৃষ্টিতে এই সিদ্ধান্তকে কর্মী স্বার্থের কথা মাথায় রেখে নেওয়া হয়েছে বলে মনে হলেও, আইটি মার্কেট বিশেষজ্ঞদের মতে এ আসলে ঘুরিয়ে কর্মীদের দরজা দেখানোর নবতম কৌশল। অর্থাৎ, কোনও কর্মী চাকরি ছাড়তে চাইলে, তাঁকে আটকে না রেখে দ্রুত রিলিজ করার পথ নিয়েছে সংস্থা। যা বেঞ্চে থাকা কর্মীদের উপর পরোক্ষে চাপ তৈরি করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। একদিকে বিপুল ছাঁটাইয়ের পরিবেশ তৈরি, অন্যদিকে চাকরি ছাড়তে ইচ্ছুকদের দ্রুত রিলিজ করার সিদ্ধান্ত। দুইয়ে মিলে আশঙ্কার মেঘ আরও ঘনীভূত টেক জায়ান্ট কগনিজেন্টের আকাশে।

 

Comments are closed.