পশ্চিমবঙ্গে কিছুতেই এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকরী করতে দেবেন না বলে বরাবর বলে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এর বিরুদ্ধে সোমবার থেকে তিনি নিজেই পথে নামছেন। এবার অ-বিজেপি শাসিত পাঁচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, কেন্দ্রের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন তাঁরা নিজেদের রাজ্যে মানবেন না (Not In My State)। পঞ্জাব, ছত্তীসগড়, মধ্যপ্রদেশ, কেরল ও দিল্লির সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ করা হবে না।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রথম থেকেই কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ করেছেন। তাঁর কথায়, এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আসলে একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এদিকে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি এই বিলে সম্মতি দেওয়ার পর তা আইন হয়ে গিয়েছে। এখন ওই আইন নিয়ে বেশ কয়েকটি অ-বিজেপি শাসিত রাজ্য বেঁকে বসেছে। মমতার পথেই ওই রাজ্যগুলিও আন্দোলনের কর্মসূচি নিচ্ছে এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে (Not In My State)।
এদিকে প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্রীয় আইন কীভাবে রাজ্যগুলি ঠেকাবে? আদৌ কি তারা ঠেকাতে পারবে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলছে, নাগরিকত্বের বিষয়টি সংবিধানের সপ্তম তফশিলের অধীনে রয়েছে এবং বিষয়টি একান্তই কেন্দ্রীয় তালিকার অন্তর্গত। তাই সব রাজ্য সরকারই সংশোধিত নাগরিক আইন মানতে বাধ্য। প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানান, কেন্দ্রীয় আইন বলবৎ না করার কোনও অধিকার নেই রাজ্যের। সেক্ষেত্রে আইন না মানলে রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে সংবিধানের ৩৫৫ এবং ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করার পথ খোলা থাকছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মনে করিয়ে দিচ্ছে।
সব মিলিয়ে একদিকে যখন অমিত শাহরা দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংশোধিত আইন প্রয়োগের, তখন অসম সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চল হয়ে বাংলা, হিন্দি বলয়ের রাজ্য থেকে দক্ষিণ ভারতের অ-বিজেপি শাসকরা বলছেন, কিছুতেই এই ‘অসাংবিধানিক’ নাগরিকত্ব আইন মানব না। শুক্রবার দিঘায় মমতা জানিয়েছিলেন, অসমে এনআরসি করা গিয়েছিল সেখানে বিজেপি শাসন ছিল বলে। কিন্তু এ রাজ্যে তাঁরা ক্ষমতায় আছেন। তাই কোনও ডিটেনশন ক্যাম্পও তৈরি করা দূর অস্ত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনই বলবৎ করতে দেবেন না। প্রয়োজনে এর জন্য জেলে যেতে হলেও তিনি প্রস্তুত।
Comments are closed.