সরকারকে প্রশ্ন করা মানেই দেশদ্রোহী নয়, মোদি-শাহকে বিঁধে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন প্রশান্ত কিশোরের
চিন কি ভারতের কোনও অংশ জবরদস্তি কব্জা করে রেখেছে? ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক শিবির এই প্রশ্ন তুলছে। কিন্তু তাদের অভিযোগ, উত্তর দেওয়ার বদলে পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় যাচ্ছে সরকারি শিবির। এই পরিস্থিতিতে ফের প্রশ্নকর্তাকে ট্রোল করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
এক পক্ষের বক্তব্য, মোদী সরকার যখন করোনা ও চিন, এই দুই জোড়া ফলার মোকাবিলা করছে, সেখানে বিরোধীরা অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করে সরকারের মনযোগ ভাঙছে। বিরোধীরা আসলে শত্রুপক্ষের হাত শক্ত করছে বলেও বিজেপির একাধিক নেতানেত্রী সওয়াল করেছেন। অন্যদিকে প্রশ্ন উঠছে, দেশবাসীর প্রশ্নের উত্তর কেন্দ্রীয় সরকার না দিলে কে দেবে? এই পরিস্থিতিতে জোড়া ট্যুইটে মোদী সরকারের দিকে নিশানা শানালেন রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোর। তাতে একদিকে মোদী সরকারের করোনা মোকাবিলা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন, অন্যদিকে প্রশ্ন করলেই দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দেওয়ার বিজেপি কর্মীদের একাংশের হালফিলের মানসিকতাকেও আক্রমণ করেছেন।
শনিবার সকালে আই প্যাক কর্ণধার ট্যুইট করে বেশ কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেন এবং লেখেন, করোনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম জাতির উদ্দেশে ভাষণের আজ ১০০ দিন হল। তারপর দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কিছু পরিসংখ্যান দেন। বর্তমানে ভারতে অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা ৫.১ লক্ষ। বিশ্বে ভারত চতুর্থ স্থানে। এছাড়াও মৃত্যু, মৃ্ত্যুহার, পজিটিভ কেস বৃদ্ধির হার দিয়েছেন। এবং সবশেষে লিখেছেন, গ্লোবালি, ভারতের উপর সবাই নজর রাখছে ঠিকই কিন্তু সম্পূর্ণ ভুল একটি কারণে।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোদী সরকারের ত্রুটি নিয়ে প্রশান্ত কিশোর আগেও একাধিকবার ট্যুইট করেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের পাবলিক হেলথে দীর্ঘদিন চাকরি করার সুবাদে মহামারি নিয়ন্ত্রণের খুঁটিনাটি নিয়ে সরকারকে সতর্কও করেছেন বারবার। প্রশ্ন করেছেন সরকারের করোনা মোকাবিলার সামগ্রিক পরিকল্পনা নিয়ে। এর মধ্যেই লাদাখ সীমান্তে ভারত চিন সংঘর্ষ। এই প্রেক্ষিতে এবার সরকারি মনোভাবকে বিঁধলেন একদা নরেন্দ্র মোদীর ইলেকশন স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর। ২৩ তারিখ তিনি ট্যুইটে লেখেন, সরকারকে প্রশ্ন করলেই কেউ দেশদ্রোহী হয় না। বিশেষ করে যখন মাতৃভূমি রক্ষা করতে গিয়ে ২০ জন বীর জীবন দিয়েছেন। তারপর লিখেছেন, এটা মোদী বা বিজেপি যখন করত তখনও দেশদ্রোহ ছিল না, আজ যখন বিরোধী বা ভারতীয় নাগরিকরা এই প্রশ্ন করছেন, তখনও দেশদ্রোহিতা নয়। শেষে হ্যাশট্যাগ দিয়ে লিখেছেন, স্টপ বুলিং।
বর্তমানে মমতা ব্যানার্জির নির্বাচনী কৌশলীর দায়িত্বে থাকা প্রশান্ত কিশোরের জোড়া ট্যুইট এই সময় আরও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। করোনা ইস্যুতে লাগাতার মোদী সরকারের তথ্যনিষ্ঠ সমালোচনার পাশাপাশি এবার সরকারকে প্রশ্ন করার ইস্যুতেও নাম না করে মোদী-অমিত শাহের দিকে আক্রমণ শানালেন রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর।
Comments are closed.