গোটা বিশ্ব যখন করোনা টিকার খোঁজে চাতক পাখির প্রতীক্ষায় তখন টিকা প্রাপকদের তালিকা তৈরিতে নেমে পড়ল ভারত। যাতে টিকা আবিস্কারের পর দ্রুত তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। কিন্তু কারা পাবেন প্রথম দফার করোনা টিকা?
প্রথম ধাপে প্রায়োরিটি বেনিফিশিয়ারিজ বাছার কাজ প্রায় গুটিয়ে এসেছে। সূত্রের খবর, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ বা ফ্রন্ট লাইন ওয়ার্কাস এবং পঞ্চাশোর্ধ মানুষ ও কোমর্বিডিটি থাকা ব্যক্তিদের প্রথম ধাপে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হবে। ভারত সরকারের হিসেব মতো সেই সংখ্যাটা ৩০ কোটি।
১৭ অক্টোবর ইংরেজি দৈনিক দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি বুস্টার ডোজ ধরে ব্যক্তি প্রতি ২ টি করে টিকার ডোজ হতে চলেছে বলে মনে করছেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা। সে কথা মাথায় রেখেই প্রায়োরিটি পপুলেশনের টিকাকরণের জন্য প্রথম কিস্তিতে ৬০ কোটি ডোজের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
এখন প্রশ্ন হল, ৩০ কোটির হিসেব এল কোথা থেকে? দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন জানাচ্ছে, প্রায়োরিটি বেনিফিশিয়ারিজের তালিকার মোট ৪ টি ভাগ। দেশজুড়ে ৫০ থেকে ৭০ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী আছেন। পুলিশ, কর্পোরেশন, পঞ্চায়েতের কর্মী, সাফাই কর্মচারি, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মী মিলিয়ে ২ কোটি। দেশে পঞ্চাশোর্ধ এবং কোমর্বিডিটি আছে এমন ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ২৬ কোটি। সবমিলিয়ে দেশের ৩০ কোটি মানুষ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা পাবেন। যা দেশের মোট জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ।
গোটা বিশ্বেই করোনা টিকা আবিস্কার নিয়ে গবেষণা চলছে। তার মধ্যে একাধিক গবেষণা উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে রয়েছে। সবচেয়ে এগিয়ে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্র্যা জেনেকার কোভিশিল্ড। ভারতে সিরাম ইন্সস্টিটিউড কোভিশিল্ডের হিউম্যান ট্রায়াল চালাচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, নভেম্বরের শেষে কিংবা ডিসেম্বরের শুরুতেই ফেজ থ্রি ট্রায়ালের ফলাফল জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও ভারত বায়োটেকের টিকারও ট্রায়াল চলছে।
ভারত সরকারের আধিকারিকরা টিকা দেওয়ার গোটা প্রক্রিয়া আগে থেকেই নিশ্চিত করে রাখতে চাইছেন। তাই টিকা এলে প্রথম কাকে দেওয়া হবে তার তালিকাও রেডি। টিকা নিয়ে গবেষণা শুরু হওয়ার সময়ই ভারত সরকার টিকা প্রক্রিয়া দেখভালের জন্য একটি ন্যাশনাল এক্সপার্ট কমিটি গড়ে দিয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রকের পরামর্শ নিয়ে কমিটি চলে। কমিটির মাথায় রয়েছেন নীতি আয়োগের সদস্য ডক্টর ভিকে পল, স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ তাঁর ডেপুটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিংবা আমেরিকার কোনও স্বাস্থ্য সংস্থার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হয়েও সেতুর কাজ করে এই কমিটি। এই কমিটিই টিকা আবিস্কারের পর তা বাজারে এলে প্রথম দফায় কারা কারা তা পাবেন, সেই তালিকা তৈরি করে ফেলেছে। এখন তা যাচাইয়ের কাজ চলছে।
Comments are closed.