বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী স্ট্যান স্বামীর রাঁচির বাড়িতে তল্লাশি অভিযান পুণে পুলিশের। ভিমা কোরেগাঁও-এলগার পরিষদ মামলায় নতুন সূত্রের সন্ধানেই তল্লাশি বলে পুণে পুলিশের দাবি। এই মামলায় মাওবাদী যোগের অভিযোগে এর আগেও স্ট্যান স্বামীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল পুণে পুলিশ। তবে পুলিশ অশীতিপর স্ট্যান স্বামীকে হেফাজতে নেয়নি।
পুণে পুলিশের স্বরগেট ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার শিবাজি পওয়ার, ভিমা কোরেগাঁও মামলার অন্যতম তদন্তকারী অফিসার। তিনি জানিয়েছেন, অশীতিপর মানবাধিকার কর্মী ফাদার স্বামীর রাঁচির বাড়ি থেকে বেশ কিছু ইলেক্ট্রনিক গেজেট এবং অন্যান্য জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাহলে স্ট্যান স্বামীকে কেন হেফাজতে নিল না পুলিশ? এই প্রশ্নের জবাবে শিবাজি পওয়ার জানিয়েছেন, সম্প্রতি এই মামলায় বেশ কয়েকটি নতুন সূত্র মিলেছে। সেই সূত্রের খোঁজেই তল্লাশি। কিন্তু কী সেই ‘নতুন’ সূত্র, যার সন্ধানে অশীতিপর মানবাধিকার কর্মীর বাড়িতে বারবার তল্লাশি চালাতে হয়? তা অবশ্য খোলসা করেননি পুলিশ আধিকারিক।
ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচির নামকুম এলাকায় বাড়ি ফাদার স্ট্যান স্বামীর। সেখানেই আদিবাসী শিশুদের জন্য একটি স্কুল চালান তিনি। বাড়িরই একটি অংশে আদিবাসী যুবক-যুবতীদের জন্য একটি প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ শিবিরও চালান অশীতিপর স্ট্যান স্বামী। বরাবরই ঝাড়খণ্ড সরকারের তীব্র সমালোচক ফাদার স্বামীকে স্থানীয়রা যেমন সম্মান করেন, তেমনই তাঁকে ভালোবাসেন। বাগিচা নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে ঝাড়খণ্ডের আদিবাসীদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছেন ফাদার স্বামী।
২০১৬ সালে ফাদার স্বামীর করা একটি সমীক্ষায় সারা দেশে সাড়া পড়ে গিয়েছিল। বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের পর স্ট্যান স্বামী দেখিয়েছিলেন, ঝাড়খণ্ডের জেলগুলো কীভাবে আদিবাসী মানুষে উপচে পড়ছে। উদাহরণ দিয়ে স্ট্যান স্বামী দেখিয়েছিলেন কীভাবে কোনও রকম বিচার ছাড়াই, মিথ্যে মামলায় বছরের পর বছর অন্ধকার কালো কুঠুরিতে কাটাতে বাধ্য হচ্ছে গরিব আদিবাসী মানুষ। স্ট্যান স্বামীর দাবি ছিল, নিজেদের অধিকারের কথা বলার অপরাধেই আদিবাসীদের জেলে পোরা হচ্ছে। এই সমীক্ষার পর থেকেই বিভিন্নভাবে তাঁকে হেনস্থা শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এবার পুণে পুলিশের তল্লাশি অভিযানের পর অভিযোগ আরও জোরালো হচ্ছে, এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় মানুষ।
Comments are closed.