করোনার গ্রাফ নিম্নমুখী করতে গিয়ে জিডিপির গ্রাফ নিম্নমুখী করে ফেলেছে সরকার। কোমর ভেঙে গিয়েছে দেশের অর্থনীতির। আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল হল, আমরা সমস্যার সমাধানের আশায় অন্ধের মতো ইউরোপের দেশগুলির দিকে তাকিয়েছিলাম। আমাদের তাকানো উচিত ছিল এশিয়ার দেশগুলির দিকে। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে অনলাইন আলোচনায় এমনই মন্তব্য করলেন বাজাজ অটোর রাজীব বাজাজ।
করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কৌশল থেকে শুরু করে লকডাউন কার্যকর করার প্রক্রিয়া, সরকারের প্রায় প্রতি পদক্ষেপ নিয়েই এদিন সরব হলেন বাজাজ অটোর ম্যানেজিং ডিরেক্টর।
লকডাউন প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, আমরা এমন একটা দৃঢ় লকডাউন বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি, যা ছিল ছিদ্রবহুল। তাই আমার মনে হয়, দুটি জায়গাতেই শোচনীয়ভাবে শেষ করেছি আমরা। একদিকে, এই ছিদ্রবহুল লকডাউন নিশ্চিত করে দিয়েছে যে ভাইরাসের প্রভাব এখনও জারি থাকবে। অপরদিকে, যখন আনলকের দিকে যাবেন তখনও এই ভাইরাস আঘাত হানবে।
কেরলের ওয়েনাডের সাংসদকে শিল্পপতি রাজীব বাজাজ জানান, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার দুটো উপায় ছিল সরকারের হাতে। প্রথমত কঠোর লকডাউন, যাতে সবাই বাড়িতে বসে থাকবে। কেউ কারও মুখ দেখবে না। দ্বিতীয় বিকল্প ছিল, পুরো বিষয়টা উপেক্ষা করা। এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া। আমাদের সরকার পাশ্চাত্যের দেখাদেখি কঠোর লকডাউনের পথে হেঁটেছে। কিন্তু আমার মনে হয় না, কোথাও লকডাউন ততটা কঠোরভাবে কার্যকর হয়েছে বলে। যার ফলে যখন আমরা অর্থনৈতিক কার্যকলাপ আবার চালু করতে চলেছি, তখনও ভাইরাসটি আমাদের এদেশে প্রবল প্রতাপে হত্যালীলা চালিয়েই যাচ্ছে। এর ফলে সংক্রমণও বাড়ছে। আবার অর্থনীতির মেরুদণ্ডও ভেঙে পড়েছে। আমরা দুদিকের কোনওটিই ভালো করে করতে পারিনি।
অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি, রঘুরাম রাজন, আশিস ঝাঁ এবং জোহান জিয়েস্কের পর বৃহস্পতিবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে শিল্পপতি রাজীব বাজাজের সঙ্গে আলোচনা করলেন রাহুল গান্ধী।
ভারতে বিনিয়োগ নিয়ে তিনি বলেন, যিনি বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন, তিনি কারও ইমেজের কারণে নয়, বরং দেশে যা রসদ মজুত, তার উপরই বিনিয়োগ করতে চলেছেন… সুতরাং প্রথম কথা হল, অর্থনীতিকে রক্ষা করতেই হবে।
বাজাজ অটোর এমডি আরও বলেন, সরকারের করোনার সংক্রমণের সংখ্যা, রিপোর্ট নিয়ে আরও স্পষ্ট তথ্য দেওয়া উচিত ছিল। তা না হওয়ায়, এখন ভুগতে হচ্ছে সবাইকে। রাজীব বাজাজের এই কথার উপর ভিত্তি করে রাহুল গান্ধী দাবি করেন, সম্ভবত ভারতই একমাত্র দেশ, যেখানে লকডাউন তোলার পরও এই গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে।
Comments are closed.