ধুঁকতে থাকা টেলিকম সংস্থাগুলিকে স্বস্তি দিল কেন্দ্র, বকেয়া মেটাতে বাড়তি সময়

দেশের বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলির দাবি মানল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। ভোডাফোন আইডিয়া, এয়ারটেল, রিলায়েন্স জিও’র মতো টেলিকম সংস্থাগুলিকে স্বস্তি দিতে স্পেক্টার্মের মূল্যে দু’বছরের জন্য ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করল কেন্দ্র। বুধবার ক্যাবিনেট কমিটি অব ইকনমিক অ্যাফেয়ার্সের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে ২০২২ সাল পর্যন্ত টেলিকম সংস্থাগুলিকে নির্দিষ্ট কয়েকটি কিস্তিতে ধাপে ধাপে বকেয়া স্পেক্টার্ম চার্জ মেটালেই হবে। তবে এর জন্য সংস্থাগুলিকে ব্যাঙ্ক গ্যারেন্টি জমা দিতে বলা হবে বলেও খবর।
কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রক সূত্রে খবর, টেলিকম সংস্থাগুলিকে স্পেক্টার্ম চার্জ ও লাইসেন্স ফি বাবদ এই দুই বছরের জন্য প্রায় ১.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা দিতে হবে কেন্দ্রকে। তার উপর রয়েছে সম্প্রতি দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ। যেখানে দেশের বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলিকে দ্রুত বকেয়া বিপুল স্পেক্টার্ম চার্জ, জরিমানা ও অন্যান্য ফি মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকার বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছিল টেলিকম সংস্থাগুলির উপর।
সরকারের কাছে সংস্থাগুলির তরফে এবং দেশের টেলিকম সংগঠনের তরফে আবেদন জানানো হয়েছিল যাতে এই বিপুল দেনা বকেয়া মেটাতে অতিরিক্ত কিছু সময় ও মোরেটোরিয়াম পিরিয়ড দেওয়া হয়। অন্যথায় এই বিপুল অর্থের চাপ সামলে ব্যবসা চালানো কঠিন হবে।
ভোডাফোনের সিইও নিক রিডও সম্প্রতি জানিয়ে ছিলেন ভারতে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাঁদের ব্যবসা। লাভ কমে লোকসান বাড়ছে। এই অবস্থায় এদেশে ভোডাফোনের ব্যবসা আদৌ আর বেশি দিন চালানো সম্ভব কিনা তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন তিনি। তথ্য বলছে, চলতি অর্থ বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক ফলাফলে ভোডাফোনের লোকসানের বহর দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা এবং এয়ারটেলের লোকসানের পরিমাণ প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার।
টেলিকম সংস্থাগুলির এই আর্থিক দুরাবস্থা দেখে দিন কয়েক আগেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছিলেন, যাতে কোনও সংস্থা ভারতে পরিষেবা বন্ধ না করে তা দেখা হবে। তারপরই বুধবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এর ফলে আপাতত কিছুটা স্বস্তি পাবে টেলিলম সংস্থাগুলি বলেই মনে করা হচ্ছে।

 

Comments are closed.