বালাকোট স্ট্রাইক হবে আগেই জানতেন অর্ণব গোস্বামী! ফাঁস হওয়া স্ক্রিনশটে আলোড়ন

অর্ণবের 'AS' কে? যার জন্য কেন্দ্রের গোপন খবর জানেন রিপাবলিক টিভির সাংবাদিক!

”Bigger than a normal strike.” ২০১৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি BARC কর্তা পার্থ দাশগুপ্তকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজে এমনই জানিয়েছিলেন রিপাবলিক টিভির কর্ণধার অর্ণব গোস্বামী। আর তার ঠিক তিন দিন পরেই পাকিস্তানের বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক করে ভারত!

টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (TRP) জালিয়াতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া BARC-এর প্রাক্তন কর্তা পার্থ দাশগুপ্ত ও অর্ণব গোস্বামীর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট এখন ভাইরাল নেটদুনিয়ায়। এই স্ক্রিনশটের সত্যতা প্রমাণিত হয়নি। তবে জানা যাচ্ছে, TRP কেলেঙ্কারিতে অর্ণব তথা BARC-এর প্রাক্তন সিইও পার্থ দাশগুপ্তর বিরুদ্ধে একটি অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করেছে মুম্বই পুলিশ। সূত্রের খবর, ৩ হাজার ৬০০ পাতার সেই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের প্রায় ৫০ পাতা জুড়ে রয়েছে এঁদের দু’জনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ন্যাপশট। মুম্বই পুলিশের মাধ্যমেই তা ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। আর তা থেকে পাওয়া যাচ্ছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। নিজের চ্যানেলের TRP বৃদ্ধির ভাবনার সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রী থেকে বলিউড অভিনেতা কঙ্গনা রানাওয়াত সম্পর্কে চ্যাট করেন অর্ণব।

ভাইরাল হওয়া চ্যাটের স্ন্যাপশট থেকে জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের বহু গোপন তথ্য আগেভাগেই জানতেন রিপাবলিক টিভির কর্ণধার। জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বহু বিষয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের পদক্ষেপ, সবই আগেভাগে জানতেন তিনি। এমনকি বালাকোট এয়ারস্ট্রাইকের কথাও তিনদিন আগে জানতেন অর্ণব। নেটিজেনদের দাবি, অর্ণবের কথায় ইঙ্গিত মিলেছে তিনি পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার কথাও আগে থেকে জানতেন।

BARC-এর প্রাক্তন সিইও পার্থ দাশগুপ্তর অর্ণব এক জায়গায় জানাচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ। যোগাযোগ রয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সঙ্গেও। কথোপকথনে অর্ণব দাবি করছেন, প্রধানমন্ত্রীর দফতর (পিএমও), তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক, এনএসএ এবং অজ্ঞাত কোনও ‘AS’ নামের ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর এত ঘনিষ্ঠতা রয়েছে যে, সরকারি অনেক গোপন তথ্যই তিনি আগেভাগে জানতে পারেন।

আবার এক জায়গায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরকে ‘অপদার্থ’ বলে কটাক্ষও করেছেন অর্ণব। চ্যাটে লিখেছেন, জাভড়েকরের জায়গায় স্মৃতি ইরানি থাকলে বেশি সুবিধা হত। ব্যবসায়িক সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং ‘AS’ নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথাও বলতে দেখা গিয়েছে রিপাবলিক টিভির মালিককে। BARC থেকে ব্যবসায়িক প্রতিযোগীদের তথ্য জোগাড় করা, অন্য চ্যানেলের বিরুদ্ধে ছক কষার প্রসঙ্গও রয়েছে ফাঁস হওয়া চ্যাটের স্ক্রিনশটে।

কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রী থেকে অভিনেতা হৃত্বিক রোশন ও কঙ্গনাকে নিয়েও পার্থ দাশগুপ্তের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ আলোচনা করেন অর্ণব। একজায়গায় কঙ্গনাকে নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেছেন তিনি।

এই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের দাবি, যে কোনও আইনের দেশে এর জন্য অর্ণবকে দীর্ঘ সময় জেলে থাকতে হত।

Comments are closed.