মরু রাজ্যে ঝড় তুলতে সচিনের ভরসা অর্ণব গোস্বামী-নভিকা কুমার! আইনজীবী মুকুল রোহতগি, হরিশ সালভেকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রসিকতার সুনামি
১৯৯৮ সাল। শারজায় সচিনের ব্যাটিং তাণ্ডবের সামনে কার্যত খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তারপর মরুঝড় শব্দটির সঙ্গে অভিন্ন হয়ে গিয়েছে সচিন তেণ্ডুলকরের নাম। এর মধ্যে পেরিয়ে গিয়েছে ২ দশকেরও বেশি সময়। ২০২০ এর মাঝে পৌঁছে ভারতের মরু রাজ্যে ফের প্রাসঙ্গিক এক সচিন। তিনি সচিন পাইলট।
এখন প্রশ্ন হল রাজনৈতিকভাবে টালমাটাল মরু রাজ্যে কি দেখা যাবে সচিনের বিক্রম? আইন-আদালত পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত কী হয় তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এর মাঝে সচিন ইস্যুতে রসিকতায় ভরে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। কারণ, সচিন পাইলট আদালতে তাঁর দাবি প্রতিষ্ঠা করতে বেছেছেন দুই আইনজীবী প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতাগি এবং হরিশ সালভেকে। যা নিয়ে নিত্য নতুন হাসি মস্করার বান ডেকেছে ভার্চুয়াল দুনিয়ায়। এই দুজনের সঙ্গে তুলনা টানা হচ্ছে টিভি নিউজের দুই পরিচিত মুখ অর্ণব গোস্বামী ও নভিকা কুমারের। বলা হচ্ছে, ভারতীয় মিডিয়ার জন্য এই দুই সংবাদিক যা, বর্তমানে ভারতীয় বিচারব্যবস্থার কাছে মুকুল রোহতাগি ও হরিশ সালভেও ঠিক তাই। আর এই জুটির উপর ভর করেই মরু রাজ্যে ঝড় তুলতে চাইছেন সচিন!
সচিনের আইনজীবী বাছাই নিয়ে প্রথম কটাক্ষ এসেছিল প্রাক্তন সাংবাদিক নিধি রাজদানের দিক থেকে। তিনি ট্যুইটে সচিনের আইনজীবী বাছাই নিয়ে খোঁচা দিয়েছিলেন।
নিধি রাজদান রেখেঢেকে বললেও সে দায় আম নেটিজনের নেই। তাই ট্যুইটারের খোলা হাটে একের পর এক কটাক্ষ, ব্যঙ্গ উড়ে আসতে থাকে সচিনের দিকে। অবভিয়াস আন্ডার ডগ নামে একটি প্রোফাইল থেকে বলা হয়েছে, ভারতীয় মিডিয়ার কাছে অর্ণব গোস্বামী আর নভিকা কুমার যা, ভারতের বিচারব্যবস্থা সামলাতে অমিত শাহের কাছে হরিশ সালভে ও মুকুল রোহতাগি তাই।
সংঘমিত্রা নামে একটি ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকেও এ বিষয়ে ট্যুইট করা হয়। সেখানে কটাক্ষের সুরে লেখা হয়েছে, বিজেপির হরিশ সালভে ও মুকুল রোহতাগি সচিন পাইলটের হয়ে সওয়াল করবেন, কারণ সচিন পাইলটের সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগাযোগ নেই!
কিন্তু দুই পেশাদার আইনজীবীকে নিয়ে এই ঠাট্টা কেন? সত্যিই কি হরিশ সালভে ও মুকুল রোহতাগির সঙ্গে বিজেপির সুসম্পর্ক আছে? ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই মুকুল রোহতাগিকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে আনা হয়। হরিশ সালভেও বিভিন্ন মামলায় বিজেপি শাসিত রাজ্যের এবং কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে সওয়াল করেছেন। সম্প্রতি রিপাবলিক টিভির সম্পাদক অর্ণব গোস্বামীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উস্কানির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় গোস্বামীর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন সালভে। এখানেই শেষ নয়, হরিশ সালভেকে শেষবার আদালতে দেখা গিয়েছিল বিজেপির বিধায়কপদ খারিজ হওয়া ভুপেন্দ্রসিন চুদাসামার হয়ে সওয়াল করতে। কোর্ট চত্বরে জনশ্রুতি, সালভের সওয়ালের জোরেই গুজরাত হাইকোর্টের অর্ডারে সুপ্রিম কোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ পেয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক চুদাসামা।
কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজস্থান সংকটের জন্য দায়ী বিজেপির যে করে হোক ক্ষমতা দখলের মনোভাব। বিজেপির পাল্টা দাবি, কংগ্রেস নিজের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাতে না পেরে বিজেপিকে দোষারোপ করছে। কিন্তু বিদ্রোহী বিধায়কদের নিয়ে বিজেপি শাসিত হরিয়ানার পাঁচতারা হোটেলে আশ্রয় থেকে শুরু করে বিস্ফোরক অডিও টেপ। সচিন-বিজেপি যোগ আর ঢাকাচাপা দেওয়া যাচ্ছে না, বলছে কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দুই আইনজীবী মুকুল রোহতাগি এবং হরিশ সালভেকে বেছে নিয়ে সেই জল্পনাতেই নতুন করে অক্সিজেন যুগিয়েছেন মরু রাজ্যে রাজনৈতিক ঝড় তুলতে চাওয়া সচিন পাইলট। যে দুই আইনজীবীকে ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় অর্ণব গোস্বামী ও নভিকা কুমার হিসেবে অভিহিত করছে সোশ্যাল মিডিয়া।
Comments are closed.