সৌরভ বিসিসিআই সভাপতি হয়েই স্বার্থের সংঘাত নীতি ভেঙেছেন! মহারাজকে নিশানা করে প্রতিবেদন নিউজ পোর্টাল scroll.in এ

বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট পদে আনুষ্ঠানিক দায়িত্বভার নিয়েই সৌরভ গাঙ্গুলি জানিয়ে দিয়েছিলেন কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা সিওএ নির্দেশিত কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট বা স্বার্থের সংঘাত নীতিতে বদল আনার কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। প্রশাসক-রাজ শেষে ১ ডিসেম্বর বোর্ডের প্রথম সাধারণ সভা। সেখানেই স্বার্থের সংঘাতের নীতিতে প্রয়োজনীয় রদবদলের বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলির একটি ট্যুইটকে তুলে ধরে কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হল।
মঙ্গলবার ইংরেজি নিউজ পোর্টাল scroll.in এ প্রকাশিত হয় একটি প্রতিবেদন। সেখানেই সৌরভের নিজস্ব ট্যুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করা একটি ট্যুইটকে কেন্দ্র করে গুরুতর স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, খুব বেশি সময় লাগল না, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিত প্রশাসকরা বিসিসিআই ছেড়ে চলে যেতেই বোর্ড ফিরছে পুরনো নীতিতে।
এখানে সৌরভের ৮ নভেম্বর করা একটি ট্যুইটকে কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্টের মূল সমস্যা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

scroll.in এর সেই প্রতিবেদন বলছে, স্বার্থের সংঘাতের গুরুতর সমস্যার জলজ্যান্ত উদাহরণ বোর্ড প্রেসিডেন্টের এই ট্যুইট। কিন্তু কেন একথা বলা হচ্ছে? তারও ব্যাখ্যা রয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রথম ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, প্রথমত, সৌরভের এই ট্যুইট বোর্ডের পদাধিকারীর করা সরাসরি অ্যাম্বুশ মার্কেটিং। কারণ, বিসিসিআই পরিচালিত আইপিএলের অফিশিয়াল স্পনসর ড্রিম ইলেভেন। কিন্তু সৌরভ ট্যুইট করছেন বাজারে ড্রিম ইলেভেনের প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থা মাই ইলেভেন সার্কেলের হয়ে। দ্বিতীয়ত, আগামী দিনে যদি দেখা যায় মাই ইলেভেন সার্কেল ভারতীয় ক্রিকেট সংক্রান্ত কোনও ধরনের চুক্তিতে আবদ্ধ হচ্ছে, তাহলে সেই চুক্তিকে সৌরভ প্রভাবিত করেননি তো, এই প্রশ্ন উঠবে।

যদিও গাঙ্গুলি নিজে স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, এটা তাঁর একেবারেই ব্যক্তিগত ব্যাপার।

‘আমার মনে হয় না এর মধ্যে কোনও সংঘাত আছে। এটা আমার ব্যক্তিগত জিনিস। আমি যদি ড্রিম ইলেভেনকে নিয়ে ট্যুইট করতাম, তাহলে সেটা স্বার্থের সংঘাত হতে পারত। কিন্তু এই ট্যুইটে আমি কোনও স্বার্থের সংঘাত দেখতে পাচ্ছি না।’ মুম্বইয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান সৌরভ।

প্রতিবেদনে সৌরভের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত বিষয়টি গুলিয়ে ফেলার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনের দ্বিতীয় ব্যাখ্যা বলছে, ভারতীয় দলের অধিনায়ক কোহলি এবং নির্বাচকদের চেয়ারম্যান এমএসকে প্রসাদের সঙ্গে সৌরভের নিত্য যোগাযোগ আছে। তাই তিনি সম্পূর্ণ নিজের সিদ্ধান্তে মাই সার্কেল ইলেভেনের টিম তৈরি করলেও, একথা কি উড়িয়ে দেওয়ার মত যে দল নির্বাচনে তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত অবচেতনে উপরোক্ত দুই ব্যক্তির সঙ্গে কথার প্রেক্ষিতে প্রভাবিত হয়নি? এটা কি কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট নয়, প্রশ্ন তোলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

তৃতীয়ত যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাতে তুলে ধরা হয়েছে বিসিসিআইয়ের স্বার্থের সংঘাত সংক্রান্ত নীতি। সেখানে বলা হয়েছে, একজন অনুমোদিত ক্রিকেট সংস্থার প্রশাসক কিংবা তাঁর কোনও নিকটাত্মীয়, অনুমোদিত সংস্থার কোনও কার্যকলাপ কিংবা কোনও টুর্নামেন্টে বাণিজ্যিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে পারবে না। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ভারতীয় দল খেলছে এমন সিরিজ নিয়ে বাণিজ্যিক স্বার্থে সৌরভের ট্যুইট কি এই নিয়মের লঙ্ঘন নয়? বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হিসেবে খেলা থেকে এভাবে অর্থ উপার্জন করতে পারেন কি সৌরভ, যেখানে এই চুক্তির মাধ্যমে তাঁকে প্রভাবিত করার পথ খুলে যায়? এই প্রশ্নও তোলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

Comments are closed.