উপর মহলে গৃহীত সিদ্ধান্ত তৃণমূলস্তরে কার্যকর হচ্ছে কি? এই প্রসঙ্গেই প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তাদের এক হাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সাফ ঘোষণা কোনও সরকারি আধিকারিক বা জন প্রতিনিধির মর্জিতে সরকার চলবে না। বললেন, ভগবানের উপরে সুপার ভগবান হচ্ছেন মানুষ।
ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে কথা বলতে উঠেছিলেন ঝাড়গ্রাম মিউনিসিপ্যালিটির অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কমিটির সদস্য প্রশান্ত রায়। তাঁর কথার সূত্র ধরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক সময়ই অভিযোগ পাচ্ছি শীর্ষ কর্তাদের গৃহীত সিদ্ধান্ত মাটিতে সঠিকভাবে ইনপ্লিমেন্ট করা হচ্ছে না। ইচ্ছেকৃত ঢিলেমি করে ফেলে রাখা হচ্ছে। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী জমি দফতরের কর্তা মনোজ পন্থকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তাহলে তোমাকে একটা উদাহরণ দিই।
বোলপুরের একটি ঘটনার উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন একজন বিখ্যাত ডাক্তারের জমির মিউটেশনের ব্যাপারে জমি দফতরের এক কর্তা অন্যায্য দাবিদাওয়া করেছেন। ওই ডাক্তারবাবুকে বলা হয়েছে, না দিলে পড়ে থাকবে। বীরভূমের জেলা শাসকের নির্দেশের পরও উনি বলেছেন, বড়োরা বললে কী হবে আমি নিচুতলায় ফেলে রেখে দেবো। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কার এই সাহসটা বেড়েছে আমি জানতে চাই।
মমতা ব্যানার্জির কথায়, এটা ভাববেন না ইলেকশনের আগে মমতাদিকে একটু বেগ দিই। মমতাদি এসব কেয়ার-টেয়ার করে না। আমি সারা জীবন ডেয়ার করা লোক। পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, যারা এসব করছে ইমিডিয়েট কথা বলতে হবে, সমস্যা সমাধান করতে হবে। গা জোয়ারি চলবে না। মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট অভিযোগটি মুখ্য সচিব আলাপন ব্যানার্জির কাছে পাঠিয়ে দেন। তাঁর কথায়, ডাক্তারবাবুর নাম বললে তুমি নিজে লজ্জা পাবে। বলে দিও, ভগবানের উপরে সুপার ভগবান হচ্ছেন মানুষ। আমি করতে দেবো না, এই আমিত্বটা এল কোথা থেকে? এত বড়ো সাহস! বলেন মমতা ব্যানার্জি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের মতোই ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী নোংরা রাজনীতি নিয়ে প্রশাসনিক কর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করে দেন। বলেন, পলিটিক্স একটু বেশি হচ্ছে। ডার্টি পলিটিক্স। এরপরই নাম না করে বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, এত দেওয়ার পরেও যারা বলে এই সরকার কিছু করেনি, আমি করে দেবো। তাদের বলি আগে নিজেদের একটা কাজ করে দেখাও। তারপর অন্যদের করে দিও।
Comments are closed.