লকডাউনের জের এবার দেশের বৃহত্তম শিল্প সংস্থা টাটায়। করোনা ভাইরাস ও তা রুখতে দেশ জুড়ে চলতে থাকা লকডাউনের কারণে বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে টাটা গ্রুপকে। তাই এবার টাটা গ্রুপের অন্তর্গত সংস্থাগুলোর উচ্চপদস্থ কর্মীরা কম বেতন নেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। টাটা সন্সের ইতিহাসে যা অভূতপূর্ব। টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরণ এবং টাটা গ্রুপের সংস্থাগুলোর সিইওরা সামগ্রিক বেতনের ২০ শতাংশ কম অর্থ নেবেন। তবে এখনই সাধারণ কর্মীদের বেতনে হাত দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই সংস্থার বলে জানা গিয়েছে।
লকডাউনের জেরে মূলত বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে টাটার হোটেল, বিমান ও গাড়ি তৈরির ব্যবসা। পুরোপুরি বন্ধ বিমান পরিষেবা, হোটেল। গাড়ির কারখানাও বন্ধ করে দিতে হয়েছে। তাই বিপুল ক্ষতির মুখ দেখেছে এই সংস্থাগুলি।
আবার অন্যদিকে লকডাউনে বেশিরভাগ মানুষের বাড়িতে থাকা বা বাড়ি থেকেই অফিসের কাজ সামলানোর ফলে চাহিদা বেড়েছে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেটের। তাই এ ক্ষেত্রে টাটা পাওয়ার ও টাটা কমিউনিকেশনস লাভের মুখ দেখেছে।
ইন্ডিয়ান হোটেলস যা তাজ হোটেল নামে বেশি পরিচিত, কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এই কোয়ার্টারে তাঁদের বেতনের একটি অংশ কোম্পানিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য দান করবে। সূত্রের খবর বেতনের ২০ শতাংশ কমানো হচ্ছে। সংস্থার সিইও পুনিত ছাটওয়াল কর্মীদের পাঠানো একটি ই-মেলে জানিয়েছেন যে প্রতি মাসে পরিস্থিতি অনুযায়ী এই বিষয়ে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
টাটার বিমান পরিবহণ সংস্থা ভিস্তারা তাঁদের ৪০০০ কর্মীর ৩০ শতাংশকে এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লোকসানে চলতে থাকা এই সংস্থাকে বাঁচাতে ইতিমধ্যে ভিস্তারার শেয়ারে আরও কিছু বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাটা সন্স।
লকডাউনের জেরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উড়ান ও হোটেল ব্যবসা। দুটি ব্যবসা মিলিয়ে টাটার প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে জানা গেছে। টাটার সব চেয়ে লাভজনক সংস্থা টিসিএসের আয় করোনা ভাইরাসের জেরে কমার কারণে প্রায় ৪.৫ লক্ষ কর্মীর বেতন বাড়েনি। সূত্রের খবর টিসিএসের সিইও রাজেশ গোপীনাথনের বার্ষিক বেতন প্রায় ১৬ শতাংশ কমেছে। একইভাবে টাটা সন্সের অন্যান্য সংস্থার টপ বসদের বেতনেও কোপ পড়ছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহে টাটা তার কর্মীদের পাওয়া বেশ কিছু সুযোগ সুবিধে পর্যালোচনা করে দেখবে বলে সুত্রের খবর।
Comments are closed.