দ্য ইকনমিক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক প্রবীণ আইনজীবী জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায় মানতে হলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার হোক বা টেলিকম, যে লাইসেন্সে ‘গ্রস রেভিনিউ’ শব্দটি থাকবে তাকেই সরকারের সঙ্গে রাজস্ব ভাগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে অন্তত ৪০ টি লাইসেন্স হোল্ডারের কাছে লাইসেন্স ফি, জরিমানা ও বকেয়া জরিমানার উপর সুদ বাবদ অর্থ দাবি করতে পারে টেলিকম দফতর। সেক্ষেত্রে গত ৫ বছরের হিসেবে টেলিকম সংস্থাগুলির কাছে টেলিকম দফতরের বকেয়া পাওনা প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা। এর আগের দশকের সুদ ও জরিমানা মিলিয়ে আরও ২.৮ লক্ষ কোটি টাকা দাবি করবে তারা। সত্যিই যদি এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তা হলে টেলিকমের লাইসেন্সপ্রাপ্ত ছোট বড় বহু সংস্থার উপর আর্থিক চাপ এসে পড়বে। আর এই ধকল সামলাতে গেলে শ্লথ হবে দেশের অর্থনীতি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী তিন মাসের মধ্যে ১.৩ লক্ষ কোটি টাকা এজিআর বাবদ বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে বিভিন্ন বেসরকারি টেলিকম সংস্থাকে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের পক্ষে যাওয়া শীর্ষ আদালতের এই রায়ের প্রভাব পর্যালোচনা করছে ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশনস (ডট)। এই রায় মেনে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে ডিমান্ড নোটিস পাঠানো হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
গত ২৪ অক্টোবর শীর্ষ আদালত এক রায়ে জানিয়েছে, লাইসেন্সপ্রাপ্ত সংস্থার মোট রাজস্ব থেকেই কেন্দ্রের এজিআর হিসেব হবে। সুপ্রিম কোর্টের রায় যদি অন্যান্য সেক্টরেও প্রযোজ্য হয় সেক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বে বহু শিল্পক্ষেত্র। ডটের (ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকম) ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বিদ্যুৎ, স্টিল, মেট্রো রেল, জ্বালানি তেল এবং গ্যাস, কেবল টেলিভিশন সহ বহু সেক্টরেই ন্যাশনাল লং ডিসটেন্স (এনএলডি), ইন্টারন্যাশনাল লং ডিসটেন্স (আইএনএলডি) এবং ভেরি স্মল অ্যাপার্চার টার্মিনাল (ভিস্যাট) -এর লাইসেন্স আছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মানলে, শুধু টেলিকম সংস্থাই নয়, ৪০ টি সেক্টরকেও সেই হিসেবে কেন্দ্রকে এজিআর দিতে হতে হবে। যদিও সংশ্লিষ্ট মামলা কেবল টেলিকম সংস্থাগুলিকে নিয়েই।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ৭ লক্ষ কোটি টাকা ঋণভারে জর্জরিত টেলিকম সেক্টরের অবস্থা আরও ধরাশায়ী। অদূর ভবিষ্যতে যে অন্যান্য সেক্টরের উপরেও একই চাপ পড়বে না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।