সংবাদপত্র থেকেও করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে, এই আতঙ্কের জেরে গত কয়েকদিনে বাংলা সহ দেশের নামী সংবাদপত্রের সার্কুলেশন হু-হু করে কমে গিয়েছে। যার ফলে বর্তমান, আজকাল, গণশক্তির মতো পুরনো এবং প্রথম সারির সংবাদপত্র সংস্থা কয়েকদিনের জন্য তাদের মুদ্রণ সংস্করণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।
এই প্রেক্ষিতে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘The Print’-কে আইনি নোটিস পাঠাল দেশের অন্যতম মিডিয়া গ্রুপ বেনেট কোলম্যান অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড বা দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া গোষ্ঠী। ‘The Print’ -এর একটি রিপোর্টে স্বাস্থ্য বা বিধিবদ্ধ কোনও কর্তৃপক্ষের তথ্য ছাড়াই লেখা হয়, খবরের কাগজ থেকে কোভিড-১৯ ছড়াতে পারে। দৈনিক কাগজের উপর তাদের এই বিদ্বেষমূলক মনোভাব সংবাদপত্রের সম্মানহানি করেছে, চরম ক্ষতি করেছে। এমনই সব অভিযোগ করে তাদের আইনি নোটিস পাঠায় দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া গোষ্ঠী।
নোটিসে তারা এও জানায়, পরবর্তীতে ‘The Print’- এর বিরুদ্ধে সিভিল কিংবা ফৌজদারি মামলাও করা হবে।
ঠিক কী হয়েছিল?
গত ২৩ মার্চ ‘The Print’ এর ওয়েবসাইটে Transmission of coronavirus through newspapers, currency possible but unlikely: Experts শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে একটি অংশে লেখা হয়, খবর কাগজ থেকেও করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে, যদিও তা খুবই কম।
দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া গোষ্ঠীর অভিযোগ, ‘The Print’ -এর এই প্রতিবেদন তাদের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় খবর কাগজের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। এটা আসলে তাদের অসাধু ব্যবসায়িক নীতি এবং সংবাদপত্রের সম্মানহানি করার অপচেষ্টা। নোটিসে টাইমস গরুপের অভিযোগ, টাইমস গরুপের কাগজের চাহিদা যাতে কমে যায় এবং পাঠক যাতে না কেনেন, তার জন্যই ওই সংস্থা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এমন খবর করেছে।
আইনি নোটিসে দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া গোষ্ঠী আরও জানায়, অন্যান্য সংবাদ সংস্থার মতো ‘The Print’-কে তারা অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবে। কিন্তু ‘The Print’ প্রতিযোগিতার মনোভাব থেকে সরে এসে অসাধুভাবে ব্যবসায়িক স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে। আইনি নোটিসে তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)- র দেওয়া তথ্য তুলে ধরে জানায়, সংবাদপত্রের মাধ্যমে করোনা সংক্রামিত হতে পারে, এমন আশঙ্কা ভীষণই কম।
‘The Print’ – এর প্রতিক্রিয়া
দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া গোষ্ঠীর আইনি নোটিস ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৬ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ‘The Print’ নিউজ পোর্টাল। তাদের দাবি, বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট পরিবেশিত হয়। তাদের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, আশঙ্কা ক্ষীণ হলেও সংবাদপত্র থেকেও এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। তাদের দাবি, এই রিপোর্ট স্বচ্ছ এবং যথাযথ। পাশাপাশি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া গোষ্ঠীকে কটাক্ষ করে ‘The Print’ -এ লেখা হয়েছে, আমরা চমৎকৃত যে টাইমস গ্রুপের মতো প্রাচীন সংবাদমাধ্যম আমাদের মাত্র তিন বছর বয়সি গ্রুপকে ‘আসল প্রতিদ্বন্দ্বী’ ভাবা শুরু করেছে। তবে এই রিপোর্ট থেকে তারা সরে আসছে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে ‘The Print’ কর্তৃপক্ষ।
Comments are closed.