নির্বাচনী হলফনামায় পরিবার ও সম্পত্তি সম্পর্কে তথ্য লুকিয়েছেন অর্জুন সিংহ। বারাকপুরের বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তৃণমূলের। রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার অভিযোগ, নিজের স্ত্রী ও সন্তান সম্পর্কে তথ্য লুকিয়ে তাঁদের সম্মানহানি করেছেন অর্জুন।
এবার ছটপুজোর দিন অর্জুন দাবি করেছিলেন তৃণমূলের ৫ সাংসদ বিজেপিতে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। তিনি সরাসরি নাম নিয়েছিলেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের। শনিবার তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে পাল্টা আক্রমণ শানালেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। সাংসদ নাদিমূল হককে পাশে বসিয়ে শশী পাঁজার অভিযোগ, সৌগত রায়কে নিয়ে অর্জুনের মিথ্যে দাবির জন্য ‘দুঃখজনকভাবে’ তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদকে প্রতিক্রিয়া দিতে হয়েছে। এরপরেই শশী পাঁজার অভিযোগ, বেঙ্গালুরু এবং দুবাইয়ে রেজিস্টার্ড দুটি সংস্থার শেয়ারের কথা তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় বেমালুম চেপে গিয়েছেন অর্জুন। মন্ত্রীর দাবি, বেঙ্গালুরু ফোর্ট ফার্ম লিমিটেড নামে সংস্থায় আড়াই হাজার শেয়ার রয়েছে অর্জুনের। তাঁর স্ত্রী শ্রাবন্তী সিংহ রায়ের নামেও শেয়ার আছে। অথচ এই দুটি তথ্য তিনি নির্বাচন কমিশনকে জানাননি। এমনকী তাঁর ম্যারেজ সার্টিফিকেট থাকা সত্ত্বেও স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পর্কেও হলফনামায় কিচ্ছু জানাননি বলে অভিযোগ মন্ত্রীর। বিজেপি সাংসদকে শশীর খোঁচা, রাজ্যে যখন নারী স্বাধীনতার লক্ষ্যে ঝাঁপানো হচ্ছে সেই রাজ্যেরই বিরোধী দলের সাংসদ স্ত্রী ও সন্তানকে অসম্মান করেছেন। তাঁদের স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছেন অর্জুন সিংহ, অভিযোগ করেন শশী। পাশাপাশি তাঁর কটাক্ষ, একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে তথ্য লুকিয়ে ভোটারদেরও অসম্মান করছেন অর্জুন। শশী পাঁজার কথায়, আমরা যাঁরা মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছি, তাঁদের যথেষ্ট দায়িত্ব থাকা দরকার।
অর্জুন সিংহ ছাড়াও এদিন নাম না করে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালকেও বিঁধেছেন মন্ত্রী। ধর্ষণ নিয়ে বেলাগাম মন্তব্য করায় অগ্নিমিত্রার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। সেই কথা তুলে ধরে শশী পাঁজার কটাক্ষ, কোথায় বলতে হবে, কতটা বলতে হবে বিজেপি সেটা জানে না। শব্দ চয়নেও এঁদের নজর দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকের শেষে শশী পাঁজা এও বলেন, এই বৈঠকের উদ্দেশ্যই হল সত্য তুলে ধরা এবং যাঁরা মিথ্যে বলছেন তাঁদের সামনে আয়না রেখে দেওয়া।
শশী পাঁজার অভিযোগের জবাব দিয়েছেন অর্জুন সিংহ। বারাকপুরের সাংসদের পাল্টা চ্যালেঞ্জ, সমস্ত অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যাক তৃণমূল। তাঁর কথায়, যখন তৃণমূলে ছিলাম তখন নথিতে কোনও গোলমাল ছিল না। যেই বিজেপিতে গেলাম সঙ্গে সঙ্গে নথি ভুয়ো হয়ে গেল? এই সমস্ত কথা বলে আসলে তৃণমূলের নেতারা বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে তাঁদের পায়ের তলায় মাটি নেই।
Comments are closed.