সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতার অপসারণ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিল তৃণমূল। দিল্লি গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বৈঠক করেন নারদ মামলায় সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতার সঙ্গে। তৃণমূলের প্রশ্ন, নারদে গ্রেফতারি এড়াতেই কি বৈঠক?
পড়ুন প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠি
দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সাংবাদিকরা তাঁকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের উল্লেখ করে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতার সঙ্গে বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে শুভেন্দু অধিকারীর জবাব ছিল, সাড়ে ৩ বছর জেল খাটা লোকের কথার উত্তর আগেও দিইনি, এখনও দেব না। এবার শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়ে তাকে বিঁধলেন কুণাল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের প্রশ্ন, সেদিন শুভেন্দু যে বাড়ি থেকে বেরোলেন, তার বাসিন্দা অমিত শাহও তো জেলে ছিলেন! শুভেন্দুর কি তা জানা নেই?
শুক্রবার বেলায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল একটি ট্যুইট করেন। তাতে শুভেন্দুকে ট্যাগ করে তিনি লেখেন, জবাব না থাকলেই এরকম ছেলেমানুষি করে ফেলো তুমি। তারপর কুণালের হুঁশিয়ারি, দলবদলেও বাঁচবে কি? কোন জেলে থাকবে, এখন থেকে ঠিক করে রাখো।
.@SuvenduWB ভাই, আমি জেলে গেছিলাম বলে তুমি নাকি উত্তর দাওনি। তা যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরোলে, তিনিও তো জেলেই ছিলেন। জবাব না থাকলেই এরকম ছেলেমানুষি করে ফেলো তুমি। যাক, দলবদলেও বাঁচবে কি? কোন্ জেলে থাকবে, এখন থেকে ঠিক করে রাখো। দিন গোণা শুরু।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) July 2, 2021
ক’দিন আগে, রাজভবনে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই সময় কুণাল ঘোষের নারদ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার বদলে বলেছিলেন সারদা মামলায় জেল খাটা লোকের প্রশ্নের জবাব আমি দিই না। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির তোলা অভিযোগের ক্ষেত্রেও কার্যত একই কথা বলেছিলেন তিনি। এবার দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে আবার কুণালের তোলা নারদ মামলায় গড়াপেটার অভিযোগের উত্তর এড়িয়ে বলেন, জেল খাটা লোকের প্রশ্নের উত্তর দেব না।
সূত্রের খবর, শুভেন্দু দিল্লি গিয়ে সলিসিটর জেনারেল তথা নারদ মামলায় সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। যে তুষার মেহেতা সুব্রত মুখার্জি, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও শোভন চ্যাটার্জির জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। সেই সময় তৃণমূল প্রশ্ন করেছিল, একই মামলায় নাম থাকা বিজেপি নেতা মুকুল রায়-শুভেন্দু অধিকারীকে কেন গ্রেফতার করা হল না? তারপর রাজনীতির আঙ্গিনায় এসেছে অনেক বদল। মুকুল ফিরেছেন তৃণমূলে। বিরোধী দলনেতা হয়েছেন শুভেন্দু। সেই শুভেন্দু অধিকারী সিবিআইয়ের আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠক নিয়ে তৃণমূলের স্পষ্ট অভিযোগ, নারদ মামলায় নিজের গ্রেফতারি এড়াতে গড়াপেটা করছেন শুভেন্দু অধিকারী। কীভাবে একজন অভিযুক্ত সিবিআইয়ের আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন? এই প্রসঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তুষার মেহেতার অপসারণ দাবি করেছেন সৌগত রায়, মহুয়া মৈত্ররা।
তুষার মেহেতার সঙ্গে বৈঠক ইস্যুতে ক্রমশ সুর তুলছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। পাল্টা জবাব কী দেবেন শুভেন্দু? সেদিকেই এখন নজর।
Comments are closed.