লকডাউনে মিড ডে মিলের বদলে কিছুই পায়নি গুজরাতের ৮৫% পরিবার, বেড়েছে স্কুলছুট! নোটিস গুজরাত হাইকোর্টের

করোনা সংক্রমণ এড়াতে গত মার্চ মাস থেকে দেশজুড়ে শুরু হয় লকডাউন। যার জেরে বন্ধ হয় স্কুল- কলেজ। এই অতিমারির সময়ে গুজরাতের ৮৫ শতাংশ পড়ুয়ার পরিবার মিড ডে মিলের পরিবর্তে কোনও সরকারি সাহায্যই পায়নি। এমনই এক সমীক্ষা তুলে ধরে গুজরাতের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল হাইকোর্ট। আইনি নোটিস দিয়ে বিজয় রুপানি সরকারের জবাব তলব করল গুজরাত হাইকোর্টের বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা ও বিচারপতি ইলেশ জে ভোরার ডিভিশন বেঞ্চ।
কী তথ্য উঠে এসেছে সংশ্লিষ্ট সমীক্ষায়, যার জেরে গুজরাতের শিক্ষা দফতরকে নোটিস পাঠাল গুজরাত সরকার?
গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে আহমেদাবাদ শহরের ৩৭৫ টি স্বল্প আয়কারী পরিবারের উপর একটি সমীক্ষা চালায় ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট, আহমেদাবাদ (আইআইএম- এ) ও ইউনিসেফ গুজরাত। এই পরিবারগুলির মাসিক আয় ১ হাজার ৯৯০ টাকা থেকে ৪ হাজার ৪০০ টাকা। সেখানে উঠে আসে ৮৫ শতাংশ পড়ুয়ার বাবা- মা জানান, লকডাউনের পর থেকে মিড ডে মিলের বদলে নগদ টাকা বা চাল- ডাল ইত্যাদি কোনও সাহায্যই তাঁরা পাননি। এই সমীক্ষায় উঠে আসে মাত্র ১৫ শতাংশ পড়ুয়াকে মিড ডে মিলের পরিবর্তে চাল, গম কিংবা ডাল দিয়েছে গুজরাত সরকার। শুধু তাই নয়, অতিমারি আবহে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে রাজ্যে রাজ্যে চালু হয় ই- লার্নিং ব্যবস্থা। কিন্তু সেখানেও মোদী রাজ্যের ৩০ শতাংশ পড়ুয়া গত মার্চ মাস থেকে পড়াশোনার সুযোগই পায়নি।
এই রিপোর্টে উঠে এসেছে, রাজ্য সরকার এক নোটিসে সাময়িকভাবে বেসরকারি স্কুলগুলির ফি মুকুব করলেও ৫৪ শতাংশ অভিভাবককে ফি দিতে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ। আবার যে অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানের পড়াশোনা চালিয়ে যাওইয়ার জন্য স্কুল ফি দিয়েছেন, তাঁদের ৫০ শতাংশ জানান যে, লকডাউনে মধ্যে আর্থিক সঙ্গতি না থাকা সত্ত্বেও এই ফি দিতে বাধ্য হন তাঁরা। এখানেই শেষ নয়, আইআইএম আহমেদাবাদ ও ইউনিসেফ গুজরাতের যৌথ সমীক্ষা বলছে, ছেলে-মেয়ের স্কুল ফি দিতে না পেরে তাদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন বাবা-মা, এমন পরিবারের সংখ্যাও অনেক।
কিন্তু অতিমারি পরিস্থিতির মধ্যে অনলাইন সহ ডিসট্যান্স এডুকেশনের সুযোগ কেমন পেয়েছেন গুজরাতের কচিকাঁচারা? সংশ্লিষ্ট সমীক্ষা বলছে, ৫৪ শতাংশ পরিবার জানায় তাদের বাড়িতে টেলিভিশন সেট এবং কেবল কানেকশন রয়েছে। ২ শতাংশের কম পরিবারের কাছে ল্যাপটক, কম্পিউটার আছে। এবং ওয়াই-ফাই ও ই-মেইল ব্যবহার করেন মাত্র ১২ শতাংশ পরিবার।
এই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে গুজরাত সরকারের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে উচ্চ আদালত। আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে বিজয় রুপানি সরকারের জবাব চেয়েছে গুজরাত হাইকোর্ট।

Comments are closed.