ব্যাঙ্ক জালিয়াতের খপ্পরে রাম মন্দির ট্রাস্ট! চেক জাল করে গায়েব ৬ লক্ষ টাকা

অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাস্টের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে চুরি! চেক জালিয়াতি করে অযোধ্যার শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে গেল ৬ লক্ষ টাকা। রামমন্দির নির্মাণের জন্য টাকা ওই অ্যাকাউন্টে জমা হয়। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

অযোধ্যার ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল দীপক কুমার জানিয়েছেন, ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর তিনটে নাগাদ শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের জেনারেল সেক্রেটারি চম্পত রাই অভিযোগ করেন, চেক জালিয়াতির মাধ্যমে ট্রাস্টের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৬ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৭১, ৪৬৮, ৪৬৭, ৪২০ এবং ৪১৯ ধারায় এফআইআর দায়ের করে অযোধ্যা পুলিশ। জালিয়াতদের শীঘ্রই খুঁজে বের করা হবে বলে জানান অযোধ্যার ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল।

ব্যাঙ্ক মারফত তাঁরা জানতে পেরেছেন, আড়াই লক্ষ এবং সাড়ে তিন লক্ষ টাকার দুটি চেক জমা করে অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ৬ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়। রাম মন্দির ট্রাস্টের সম্পাদক চম্পত রাই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নয়াঘাট শাখায় অ্যাকাউন্ট রাম মন্দির ট্রাস্টের। ক্লোন করা চেকে চম্পত রাই এবং ট্রাস্টের আর এক সদস্যের সই ছিল। ট্রাস্টের অ্যাকাউন্ট থেকে সেই জাল চেক দুটি ভাঙিয়ে টাকা ট্রান্সফার করা হয় পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে। ওই অ্যাকাউন্টটি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

ডিআইজি জানিয়েছেন, মন্দির কমিটির তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে, যে সিরিয়াল নম্বরের চেক দুটি ভাঙিয়ে ওই ৬ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে, সেই নম্বরের আসল চেক দুটি রয়েছে কমিটির হেফাজতেই।

বুধবার বিকেলে ট্রাস্টের সম্পাদক চম্পত রাই ব্যাঙ্কের তরফে হঠাৎই একটি ভেরিফিকেশন ফোন পান, তাঁকে জানানো হয়, মন্দিরের অ্যাকাউন্ট থেকে চেক দিয়ে ৯ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা তুলতে চাওয়া হচ্ছে। শুনেই তিনি ব্যাঙ্ককে জানিয়ে দেন চেক ক্লিয়ার না করতে, কারণ তাঁরা এ টাকা তুলছেন না। তারপর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানায় আগের দুটি লেনদেনের ব্যাপারে। যেখানে ১ ও ৩ সেপ্টেম্বর যথাক্রমে আড়াই লক্ষ এবং সাড়ে তিন লক্ষ টাকা তোলা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কোনও ব্যাঙ্ককর্মীও এই জালিয়াতিতে যুক্ত থাকতে পারে বলে সন্দেহ পুলিশের। কারণ, চেকের নির্দিষ্ট সিরিয়াল নম্বর গ্রাহক ছাড়া শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছেই থাকে। সেই নম্বর জানলে তবেই চেক ক্লোন করা সম্ভব।

২০১৯ সালে ঐতিহাসিক অযোধ্যা রায়ে সুপ্রিম কোর্টই রামমন্দির নির্মাণের জন্য একটি ট্রাস্ট গড়ার নির্দেশ দেয়। সেই অনুযায়ী শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের উপর রামমন্দির নির্মাণের ভার। গোটা পৃথিবী থেকে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য সমস্ত অনুদান এই অ্যাকাউন্টেই জমা হয়।

Comments are closed.