ভারাভারা রাও ও সাইবাবার জামিন চেয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে চিঠি নোয়াম চমস্কি, জুডিথ বাটলার, পার্থ চ্যাটার্জি সহ ১০০ বুদ্ধিজীবীর

দেশে এই মুহূর্তে করোনা সংক্রমিত ৩.৩২ লক্ষ, মৃত্যু হয়েছে ৯,৫২০ জনের। প্রায় প্রতিদিন নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন বহু মানুষ। লকডাউন উঠে যাওয়ার এই সময় কার্যত নিয়ম করে বাড়ছে সংক্রমণ। এই অবস্থার মধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলে গাদাগাদি করে রয়েছেন বিচারাধীন এবং সাজাপ্রাপ্তরা। এবার মহারাষ্ট্রের ভিড়ে ঠাসা জেলে বন্দি অধ্যাপক জি এন সাইবাবা এবং ভিমা কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্ত কবি তথা সমাজকর্মী ভারাভারা রাওয়ের জামিনে মুক্তির দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ এবং দেশের প্রধান বিচারপতি বোবদেকে চিঠি দিলেন বিশ্বের প্রথম সারির অন্তত ১০০ জন বুদ্ধিজীবী। চিঠি প্রেরকের তালিকায় রয়েছেন নোয়াম চমস্কি, জুডিথ বাটলার, হোমি কে ভাবা, পার্থ চ্যাটার্জি, জেরাল্ড হর্নের মতো ব্যক্তিত্ব।
৮০ বছর বয়স্ক কবি তথা ভারাভারা রাওকে ভিমা কোরেগাঁও মামলায় জেলে ঢুকিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। চিঠিতে লেখা হয়েছে, গত ২৮ মে কবি তথা সমাজকর্মী রাও জেলেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাঁকে মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সরকারের কাণ্ডজ্ঞানহীনতার জন্য অবস্থা সামান্য স্থিতিশীল হতেই ১ জুন তাঁকে জেলে ফিরিয়ে আনা হয়। ভারাভারা রাওয়ের পরিবারকে হাসপাতালে দেখা করতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি কিংবা ফোনেও কবির সঙ্গে কথা বলা সুযোগ পাননি তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে ভারাভারা রাওয়ের স্ত্রী এনআইএ কোর্টে স্বামীর জামিনের আবেদন করেন। বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, কিন্তু আদালত তা খারিজ করে দেয়। যদিও ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা প্রত্যেক নাগরিককে, জেলবন্দি হলেও, বাঁচার অধিকার দিয়েছে। এমনই বিবৃতিতে লিখেছেন চমস্কি, বাটলার, পার্থ চ্যাটার্জিরা।
রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ এবং প্রধান বিচারপতি বোবদেকে পাঠানো বিবৃতিতে বিশ্ববরেণ্য অধ্যাপকেরা উদ্বেগ জানিয়েছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেলবন্দি অধ্যাপক জি এন সাইবাবার অবস্থা নিয়েও। তিনি মাও যোগের অভিযোগে জেলবন্দি। এমনিতেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় কাবু সাইবাবা। তাঁর অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, গলব্লাডার স্টোন সহ আরও একাধিক সমস্যা রয়েছে। জেলে যাওয়ার পর থেকে তাঁর হাতের কার্যকারিতাও চলে হয়ে গিয়েছে। বিবৃতিতে চমস্কি, বাটলাররা লিখেছেন, এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তাঁকে জেলে রেখে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সামিল। মেডিক্যাল বেলে সাইবাবাকে জামিন দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
জি এন সাইবাবা এবং ভারাভারা রাওয়ের ক্রমেই খারাপ হওয়া শারীরিক অবস্থা এবং বয়সের কারণে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ভিড়ে ঠাঁসা জেলে রেখে দেওয়া হলে, তাঁদেরও সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিবৃতিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদেকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে, আমরা আপনার কাছে আবেদন করছি ওই দু’জনকে দ্রুততার সঙ্গে জামিনে মুক্তি দিতে, যাতে তাঁরা সংবিধানবর্ণিত বাঁচার অধিকারটুকু অন্তত পান।

Comments are closed.