অশীতিপর ভারাভারা রাও বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি মুম্বইয়ের নানাবতী হাসপাতালে। জেলেই তিনি করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। ডাক্তাররা বলছেন, তাঁর ডিমেনশিয়ার উপসর্গও দেখা দিয়েছে। মে মাসে কবি ভারাভারা রাওয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে প্রথমে সরকারি জেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে। তাঁকে জেজে হাসপাতাল থেকে সরিয়ে ভর্তি করা হয়েছে বেসরকারি নানাবতী হাসপাতালে।
এর মধ্যেই ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ আদালতে দাবি করল, ভারাভারা রাওয়ের এমন কিছুই হয়নি যে তাঁকে মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠাতে হবে। তিনি পরিস্থিতির ফায়দা তোলার জন্যই এসব করছেন।
সম্প্রতি বম্বে হাইকোর্টে ১৭২ পাতার হলফনামা জমা দিয়েছে এনআইএ। সেখানে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি দাবি করেছে, পরিস্থিতির ফায়দা তুলে জামিন আদায় করতে চাইছেন ভারাভারা রাও। ২০১৮ সালের জুন মাসে এলগার পরিষদ-ভীমা কোরেগাঁও মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে জেলেই আছেন কবি ও সমাজকর্মী ভারাভারা রাও।
এনআইয়ের হলফনামাটি পেশ করেছেন মামলার তদন্তকারী অফিসার তথা পুলিশ সুপার বিক্রম খালাটে। খালাটের দাবি, বর্তমান কোভিড অতিমারি পরিস্থিতি এবং নিজের বয়সের দোহাই দিয়ে অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে চাইছেন ভারাভারা রাও। তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়েও নিজেদের বক্তব্য হলফনামায় জানিয়েছে এনআইএ। তাতে বলা হয়েছে, রাওয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি নিয়ে যে সওয়াল করা হচ্ছে তা নিতান্তই অর্থহীন। কারণ এনআইএ বিশেষ কোর্ট রাওয়ের জামিন খারিজ করার সময়ই তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনায় রেখেছিল।
বর্ষীয়ান কবি ও সমাজকর্মী ভারাভারা রাওয়ের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তাঁর পরিবার ও আইনজীবীরা আদালতে আপিল করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, জেলে সামান্যতম মেডিক্যাল সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না ভারাভারা রাওকে। কার্যত মৃত্যু শয্যায় শুয়ে আছেন প্রবীণ কবি। পরিস্থিতি এমনই যে ভারাভারা রাওয়ের স্নায়ুরোগজনিত সমস্যা হচ্ছে। রাওয়ের পরিবারের আরও অভিযোগ, তাঁরা যখন ভারাভারা রাওকে দেখতে জেজে হাসপাতালে যান, দেখেন, মল-মূত্রে ভেসে যাওয়া বিছানায় অসহায়ভাবে শুয়ে আছেন তিনি। জানা গিয়েছে জেজে হাসপাতালে থাকাকালীনই রাওয়ের মাথাও ফেটেছে। হাসপাতালের তরফে বলা হয়েছে জলের গ্লাস ধরতে গিয়ে পড়ে যান ভারাভারা রাও। তাতেই মাথায় আঘাত।
যদিও ভারাভারা রাওয়ের শরীর এমন কিছু খারাপ নয় বরং তিনি জামিন আদায়ে এসব করছেন বলে মনে করছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি।
প্রসঙ্গত বিজেপি মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা হারানোর পরই তড়িঘড়ি এই মামলা রাজ্য পুলিশের হাত থেকে নিয়ে এনআইএকে দেয় কেন্দ্র। যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা শরদ পওয়ার।
Comments are closed.