ভ্রমণ মানেই বাড়তি আনন্দ। নটা-ছটা’র জীবনে ব্যস্ত মানুষগুলোও চায় দু’দণ্ড স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে। কিন্তু হাতে সময় কম থাকার দরুন লম্বা ছুটির অবসরে দূরে কোথাও যাওয়ার সম্ভব হয় না। আপনি কী শহর থেকে দূরে লালমাটি আর শালবনের স্বাদ পেতে চাইছেন? তবে হাতে দিন তিনেকের ছুটি নিয়ে অবসর যাপনের বেরিয়ে পড়ুন শান্তিনিকেতনের পথে।
শান্তিনিকেতন নামটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে জায়গাটির বিশেষত্ব। শান্তিনিকেতন মানে “শান্তির নীড়”। শহুরে মানুষরা তো একটু শান্তিরই খোঁজ করে! এখানে এলে লালমাটি আর সবুজ বনানীর চিত্রপটে মন জুড়িয়ে যাবে, একটা আলাদাই শান্তির অনুভূতি হবে। প্রকৃতির অতুলনীয় ঐশ্বর্য, সংস্কৃতি, শিল্প আর সাহিত্যের অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছে শান্তিনিকেতনের মাটিতে।
শান্তিনিকেতনে সারা বছর নানান উৎসব উদযাপন করা হয়। যার মধ্যে লোক পরিচিত এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় হল পৌষ মাসে পৌষ মেলা ও বসন্তের রঙিন উৎসব বসন্ত উৎসব অথবা দোল উৎসব। দেশ-বিদেশ থেকে এই উৎসব উপলক্ষে বহু পর্যটক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে শান্তিনিকেতনে আসে।
২০২০ তে করোনা অতিমারির সংকট কাটিয়ে অনেকেই দূরে ঘুরতে যেতে চাইছেন না। এদিকে গোটা শহর শীতের আমেজ কাটিয়ে বসন্ত দুয়ারে পা রেখেছে। পৌষ মেলা হাতছাড়া হলেও বসন্ত উৎসব এখনও চলে যায়নি। তাই ভাবনায় লাগাম দিয়ে দোল উৎসব পালন করতে ঘুরে আসুন শান্তিনিকেতন।
ভ্রমণ স্থান:
পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার লালমাটির শহর বোলপুরে অবস্থিত শান্তিনিকেতন। এখানে রয়েছে, গীতাঞ্জলি রেল মিউজিয়াম, কঙ্কালিতলা, বিশ্ব বাংলা হাট, প্রকৃতি ভবন, কোপাই নদী, সৃজনী শিল্পগ্রাম, বল্লভপুর ডিয়ার পার্ক, আম্র কুঞ্জ মালঞ্চ গৌরাঙ্গ, বিশ্বভারতী, কলা ভবন, বিশ্বভারতী মিউজিয়াম, খোয়াই বনের হাট।
কিভাবে যাবেন?
ট্রেনে করে যেতে চাইলে হাওড়া থেকে ট্রেনে চেপে বোলপুর স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে টোটো গাড়ির সাদরে মিনিট পনেরো গেলেই পৌঁছে যাবেন শান্তিনিকেতন। এছাড়া সড়কপথেও যাওয়া যেতে পারে। কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনে যেতে গাড়িতে সময় লাগবে ৪ ঘন্টা।
কোথায় থাকবেন?
থাকার জন্য বিভিন্ন হোটেল, লজ, গেস্টহাউস ও রিসোর্ট রয়েছে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন বিভাগের একটি নিজস্ব হোটেল আছে।
বোলপুর স্টেশনে নামার পর পথে দেখে নিন গীতাঞ্জলি রেল মিউজিয়াম। এরপর গেস্ট হাউসে ফিরে এসে বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন, কঙ্কালিতলা, বিশ্ব বাংলা হাট, প্রকৃতি ভবনের উদ্দেশ্যে। পরের দিন সকালে বেরিয়ে পড়ুন শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসের দিকে। ঘোড়ার মাঝে মধ্যাহ্নভোজ সেরে টোটো করে চলে যান কোপাই নদী দর্শনের। যদি আপনি শুক্র-শনি-রবি এই তিন দিনের ছুটি নিয়ে শান্তিনিকেতন ঘুরতে যান তবে অবশ্যই সোনাঝুরির হাট থেকে ঘুরে আসবেন। প্রতি সপ্তাহের শনিবার করে সোনাঝুরির হাট বসে। শেষ দিন বাকি থাকা জায়গাগুলি দেখে বেরিয়ে পড়ুন বাড়ির উদ্দেশ্যে।
Comments are closed.