গ্রেফতার উমর খালিদ, দিল্লি দাঙ্গায় অতিরিক্ত চার্জশিটে ইয়েচুরি, যোগেন্দ্র যাদব সহ বিশিষ্টদের নাম! প্রতিবাদে বাম সহ সব বিরোধী
দেশের ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমকে তামাশায় পর্যবসিত করেছে অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ফেব্রুয়ারির দিল্লি দাঙ্গা মামলার অতিরিক্ত চার্জশিটে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, স্বরাজ ইন্ডিয়া পার্টির নেতা যোগেন্দ্র যাদব, জেএনইউয়ের অধ্যাপক তথা অর্থনীতিবিদ জয়তী ঘোষ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্বানন্দের নাম ঢোকানোর ঘটনায় এভাবেই প্রতিক্রিয়া দিল সিপিএম পলিটব্যুরো। দিল্লি পুলিশ অমিত শাহের মন্ত্রকের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে। একই ভাষায় নিন্দা এসেছে কংগ্রেস শিবির থেকেও। এরই মধ্যে রবিবার রাতে দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছে জেএনইউয়ের প্রাক্তন ছাত্র নেতা তথা দলিত-সংখ্যালঘু অধিকারের পক্ষে লড়াই করা উমর খালিদকে। দিল্লির হিংসার অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে ইউএপিএ ধারায় উমর খালিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কখনও কোর্ট চত্বরে আইনজীবীদের ঢিল-পাটকেলের মুখে মাথা বাঁচাতে ব্যস্ত দিল্লি পুলিশের ছবি বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে আবার কখনও সদর দফতরের বাইরে দিল্লি পুলিশের নীচুতলার কর্মীদের ঘেরাও বিক্ষোভ। এ বছরের শুরু থেকেই কোনও না কোনও কারণে শিরোনামে দিল্লি পুলিশ। ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী দিল্লির একাংশে ভয়াবহ দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় বহু মানুষের। সেই ঘটনার তদন্তে একেবারে শুরু থেকে দিল্লি পুলিশের গতিবিধি কপালে ভাঁজ ফেলেছে সাধারণ মানুষের। অন্তত এমনটাই দাবি বিরোধীদের। দাঙ্গা মামলার অতিরিক্ত চার্জশিটে পুলিশ ইয়েচুরি, যোগেন্দ্র, জয়তী, অপূর্বানন্দদের নাম ঢুকিয়ে অমিত শাহের বিরোধী খতম অভিযানে আনুষ্ঠানিকভাবে নাম লিখিয়েছে মাত্র, বলছেন দিল্লির সিপিএম নেতারা। তবে মোদী সরকারের আগ্রাসনের মুখে পিছু হঠার প্রশ্ন নেই। জানিয়ে দিয়েছেন ইয়েচুরি।
দিল্লি দাঙ্গার চার্জশিটে নাম থাকা সীতারাম ইয়েচুরি বলছেন, সিএএ বিরোধী বিক্ষোভের নেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে। অমিত শাহের দিল্লি পুলিশের চালচলনেও সেই প্যাটার্ন দেখতে পান ইয়েচুরি। ভীমা কোরেগাঁওয়ের কথাও উল্লেখ করেন। বিক্ষোভ দেখিয়ে টার্গেট হয়েছি, তা বলে বিক্ষোভ দেখানো বন্ধ হবে না। আবার রাস্তায় নামছি। দেখি মোদী সরকার কীভাবে আটকায়। বলে দেন জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের একদা প্রেসিডেন্ট।
রাজধানীর বাম ছাত্র নেতৃত্ব মনে করিয়ে দেন অতিরিক্ত চার্জশিটে যথারীতি দাঙ্গায় উসকানি দেওয়া বিজেপি নেতাদের কারও নাম নেই। তাঁদের প্রশ্ন, কপিল মিশ্র কিংবা অনুরাগ ঠাকুরের যোগ খুঁজে না পেলেও সীতারাম, যোগেন্দ্র বা জয়তীদের বিরুদ্ধে দাঙ্গার হাতেগরম প্রমাণ দিল্লি পুলিশের হাতে মজুত, এটা কতটা বিশ্বাসযোগ্য?
এই প্রেক্ষিতে বক্রোত্তির ছলে কেরলের অর্থমন্ত্রী থমাস আইস্যাকের ট্যুইট, কমরেড সীতারাম আর দেশের উজ্জ্বলতম মস্তিষ্কগুলোর মধ্যে অন্যতম কয়েকজনের নাম চার্জশিটে জুড়ে মোদী সরকার কী প্রমাণ করতে চাইছে? ওরা কি জানে না আমরা স্বেচ্ছায় এ পথ বেছে নিয়েছি!
Comments are closed.