নয়া ভারতের জন্য নয়া রিলায়েন্স, রাইটস ইস্যুতে অভূতপূর্ব সাড়ার পর বিনিয়োগকারীদের ধন্যবাদ মুকেশ আম্বানীর

৫৩ হাজার ১২৪ কোটি টাকারও বেশি রাইটস ইস্যু প্রক্রিয়ায় বিশাল সাফল্য রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (RIL)। প্রায় ১.৫৯ গুণ অতিরিক্ত সাবস্ক্রিপশন হয়েছে রিলায়েন্স রাইটস ইস্যুর এবং মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৮৪ হাজার কোটি টাকা!

এই অভূতপূর্ব সাড়া পেয়ে সমস্ত শেয়ারহোল্ডারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানী। এই প্রেক্ষিতে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, নতুন ভারতের জন্য এক নতুন রিলায়েন্স তৈরির পূর্ব ঘোষিত অঙ্গিকারের কথা।

গত ২০ মে রিলায়েন্স রাইটস ইস্যু শুরু করার পর থেকেই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া মেলে৷ হাজার হাজার ছোট বিনিয়োগকারী থেকে বড় বড় প্রতিষ্ঠান, দেশ-বিদেশ থেকে সবাই বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছেন৷ রাইটস ইস্যুতে পাবলিক অংশীদারিত্বের সাবস্ক্রিপশন ছিল ১.২২ গুণ৷ তা ৩ জুন গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১.৫৯ গুণে। আগামী ১০ জুন নাগাদ ইক্যুইটি শেয়ার বণ্টন হবে বলে খবর।

বিনিয়োগকারীদের রাইটস ইস্যু সম্পর্কে অবহিত করতে টিভি, রেডিও, সংবাদপত্র, ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং এই প্রথমবার AI বেসড চ্যাটবট, ই মেল এবং এসএমএস পাঠানো হয়েছিল৷

সবথেকে বড় কথা, রাইটস ইস্যুতে বিনিয়োগের পরিমাণ রেকর্ড সৃষ্টি করলেও পুরো প্রক্রিয়াটিই ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে৷ করোনার কারণে জারি হওয়া লকডাউন চললেও তাই কোনও বাধা সৃষ্টি হয়নি৷ দেশের প্রায় ৮০০ শহর এবং বিদেশের বড় বড় অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির নিয়ন্ত্রক, ব্যাঙ্কার, আর্থিক সংস্থা, খুচরো বিনিয়োগকারী এবং অন্যান্যরা বাড়ি বা অফিসে বসেই মসৃণভাবে গোটা প্রক্রিয়া সারতে পেরেছেন৷

এই সাফল্যের বিষয়ে বলতে গিয়ে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ অম্বানী বলেন, ‘আমাদের প্রিয় এবং সম্মানীয় শেয়ার হোল্ডারদের রাইটস ইস্যু প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার জন্য এবং একে সফল করে ভারতের মূলধনী বাজারে নজির সৃষ্টি করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই৷ তিনি বলেন, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর প্রতিষ্ঠাতা ধীরুভাই অম্বানীর সময় থেকেই শেয়ার হোল্ডাররাই আমাদের সবথেকে বড় শক্তি৷ দশকের পর দশক ধরে বিশ্বাসের উপর গড়ে ওঠা এই সম্পর্ক আমাদের নতুন শিখরে পৌঁছতে উৎসাহিত করেছে৷ আমাদের বরাবরের লক্ষ্য, ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দ্রুতগতিতে ভারতের সার্বিক উন্নতি, যার ফলে দেশের ১৩০ কোটি মানুষের জীবনেও উন্নতি আসবে৷ রাইটস ইস্যুতে এই বিপুল সাড়া প্রমাণ করেছে যে, আমাদের শেয়ারহোল্ডাররা সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করেন৷

মুকেশ অম্বানী আরও বলেন, কোভিড ১৯ মহামারির মধ্যে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের রাইটস ইস্যু-র সাফল্য দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারী এবং ছোট খুচরো শেয়ার হোল্ডারদের ভারতীয় অর্থনীতির শক্তিতে আস্থার পরিচয়৷ আমি নিশ্চিত, ভারতীয় অর্থনীতি আগামী দিনে আবার উচ্চ হারে বৃদ্ধির পথে ফিরবে এবং ভারত বিশ্বের অগ্রণী ডিজিটাল দেশ হিসেবে নিজেকে মেলে ধরবে৷

রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বেসরকারি ক্ষেত্রে ভারতের বৃহত্তম সংস্থা৷ যার মোট বাৎসরিক লেনদেনের পরিমাণ ৬ লক্ষ ৫৯ হাজার ২০৫ কোটি টাকা৷ নগদ মুনাফার পরিমাণ ৭১ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা এবং ৩১ মার্চ ২০২০ সালে শেষ হওয়া আর্থিক বছরে মোট লাভের পরিমাণ ৩৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা৷

হাইড্রোকার্বন উত্তোলন ও উৎপাদন, পেট্রোলিয়াম পরিশোধন এবং মার্কেটিং, পেট্রোকেমিক্যালস, রিটেল এবং ডিজিটাল ক্ষেত্রে বিস্তৃত রিলায়েন্সের বাজার৷ বিশ্বের সর্ববৃহৎ পাঁচশোটি প্রতিষ্ঠানের যে তালিকা Fortune তৈরি করেছে, তাতে শীর্ষ ভারতীয় সংস্থা হিসেবে স্থান পেয়েছে RIL, রাজস্ব এবং মুনাফা, দুই মানদণ্ডেই সেই তালিকায় ১০৬ নম্বরে রয়েছে তারা৷ ২০১৯ সালের Forbes Global 2000 ক্রমতালিকায় ৭১তম স্থানে রয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড৷ LinkedIn-এর বিচারে ২০১৯ সালের সেরা কর্মস্থল হিসেবে ভারতীয় সংস্থাগুলির মধ্যে ১০ নম্বরে মুকেশ আম্বানীর রিলায়েন্স৷

Comments are closed.