ঘুষ অথবা ব্যক্তিগত সম্পর্ক, এছাড়া ভারতে কোনও সরকারি পরিষেবা পাওয়া খুব কঠিন! হ্যাঁ, এমনই মনে করেন দেশের বেশিরভাগ মানুষ। সমীক্ষায় প্রকাশ, এশিয়া মহাদেশের মধ্যে ঘুষের হার সর্বোচ্চ এই দেশেই, ৩৯ শতাংশ। কোনও জন পরিষেবা পেতে ভারতে নিজের ব্যক্তিগত সংযোগ ও সম্পর্কের উপর ভরসা রাখেন ৪৬ শতাংশ মানুষ। সেটাও এশিয়ায় সর্বোচ্চ। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সমীক্ষায়।
‘গ্লোবাল কোরাপশন ব্যারোমিটার- এশিয়া’ শীর্ষক একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল সংস্থা। তাতে জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১৭ টি দেশের ২০ হাজার মানুষের প্রতিক্রিয়া নেওয়া হয়। গত ১২ মাসে ঘুষ নিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি জানা ছিল সমীক্ষার উদ্দেশ্য। যেখানে পুলিশ প্রশাসন, আদালত, সরকারি হাসপাতাল ইত্যাদিতে পরিষেবা পেতে মানুষের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছে, ঘুষ দেওয়া-নেওয়া সর্বোচ্চ ভারতে!
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ভারতীয়দের ৪২ শতাংশ জানিয়েছেন পুলিশের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে তাঁদের ঘুষ দিতে হয়েছে। পরিচয়পত্র পাওয়ার মতো সরকারি পরিষেবার ক্ষেত্রেও চাই ঘুষ। এই জাতীয় পরিষেবা পেতে ৪১ শতাংশ মানুষ ঘুষ দিয়েছেন। তাছাড়া ব্যক্তিগত সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে পুলিশের কাছ থেকে কাজ হাসিল করেছেন ৩৯ শতাংশ মানুষ। আইডি কার্ড পাওয়া ও আদালতের কাজে ব্যক্তিগত সম্পর্কের সাহায্য নেওয়ার পরিসংখ্যান যথাক্রমে ৪২ ও ৩৮ শতাংশ।
এখানেই শেষ নয়, সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৬৩ শতাংশ ভারতীয় মনে করেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ হতে পারে। ৫০ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন তাঁদের কাছে উৎকোচ চাওয়া হয়েছে তারপর তা দিয়ে কাজ করাতে হয়েছে। আবার ৩২ শতাংশের দাবি, পার্সোনাল কানেকশন ছাড়া ওই পরিষেবা তাঁরা পেতেন না।
সব মিলিয়ে সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৪৭ শতাংশ মানুষ মনে করছেন, গত ১২ মাসে দেশে দুর্নীতির ব্যাপক বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। ৬৩ শতাংশের প্রতিক্রিয়া, দুর্নীতি দমনে সরকার ভালো কাজ করছে।
ভারতের পর এশিয়ায় ঘুষের হার সর্বোচ্চ কম্বোডিয়ায় (৩৭%)। তৃতীয় ইন্দোনেশিয়া (৩০%)। এশিয়ায় ঘুষের হার সর্বনিম্ন জাপানে (মাত্র ২%)।
Comments are closed.